পাকুন্দিয়ায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন
পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
কিশোরগঞ্জে পাকুন্দিয়ায় বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। আকাশে মেঘ জমলেই কিংবা সামান্য বাতাস শুরু হলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। দিন-রাতে প্রায় অর্ধেক সময় ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে।
রমজান মাসে শুরুতে ইফতার, তারাবি সেহরির পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং হয়েছে। গ্রাহকরা বলছেন, পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। পাকুন্দিয়ায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার গ্রাহক। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে শিশুরা। গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে প্রচণ্ড গরমে প্রতিটি বাড়িতে শোনা যায় শিশুদের চিৎকার। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম বিপাকে। লোডশেডিংয়ের কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম, এদিকে কম্পিউটার, ফ্রিজ, পানির মোটর, ফটোকপি মেশিনসহ বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার পথে।
এছাড়াও বাড়তি ভোগান্তি যোগ হয়েছে অতিরিক্ত ভূতুড়ে বিল। একজনের বিল আরেকজনের নামে তৈরি করা দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুতের নতুন সংযোগ ও খুঁটি সরানোর নামে একটি মহল হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগ কেন্দ্রে ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায় না কাউকে। জনগণের এমন ভোগান্তি দেখার বা শোনার কেউ নেই।
সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ও লোডশেডিংয়ের কারণে পানি না পেয়ে শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ফসলি জমি। এ অবস্থায় নিরবচ্ছিন্নভাবে জমিতে সেচের পানি পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। উপজেলার কৃষকরা জানান, একদিকে বৃষ্টি নেই, অন্যদিকে লোডশেডিং। এতে জমিতে সময় মতো ও পরিমাণ মতো সেচ দিতে পারছেন না। ফলে সব ধরনের ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে। ঢ্যাঁড়স, করলা, শসা, বেগুন, কুমড়া, মরিচ, পটলসহ সবজি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় বর্তমানে ২২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল করা হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই প্রকৃতিতে প্রচণ্ড দাবদাহ বিরাজ করছে। বৃষ্টি না থাকায় ইরি-বোরো খেতে কৃষক প্রয়োজনীয় সেচ দিতে সমস্যায় পড়েছেন। ফলে ধান চিঁটা হয়ে যেতে পারে। বোরোর ফলনও কমে যেতে পারে। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে বর্তমানে টমেটো চাষিসহ অন্য ফসল চাষিরা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। চারা গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফল ঝরে পড়ছে।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পাকুন্দিয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চলমান গ্রীষ্ম মৌসুমে তীব্র দাবদাহ এবং পবিত্র রমজান মাসের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত লোডশেডিংয়ের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।