Logo
Logo
×

সারাদেশ

‘আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন, বললেই মাঠে যেতে হবে’

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৬ পিএম

‘আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন, বললেই মাঠে যেতে হবে’

পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফজলুর রহমান (৬৫) প্রতিকারে পরামর্শ পেতে যাওয়ায় গালমন্দসহ অফিস থেকে বের করে দেওয়ার হোতা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সেবা দেওয়ার পরিবর্তে উল্টো কৃষি অফিস থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা হলেন- অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ) শহিদুল আমিন ও অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মামুন ইয়াকুব। বুধবারই তদন্ত প্রতিবেদন পাঠাবে। ঘটনাস্থলে গেছে তদন্ত কমিটি। ভুক্তভোগীর সঙ্গে ও বোরো ধানের প্রজেক্টে পোকার আক্রমণ নিরূপণে কার্যকরী পদক্ষেপ ও পরামর্শ দেওয়া হবে বলে জানান মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবি আহ নূর আহমেদ।

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রবি আহ নূর আহমেদ জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার দায়িত্বই হচ্ছে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে কাজ করা। সেখানে কৃষকের সমস্যার প্রতিকার না করে উল্টো তাকে গালমন্দ করে অফিসের বাইরে বের করে দেওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভুক্তভোগী শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান। তিনি জানান, এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে পোকার আক্রমণে তার কচি ধান মরে যাচ্ছে। এতে তিনি খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। ওই কৃষকের অভিযোগ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে থেকে কৃষি ও কৃষকদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার কথা থাকলেও তারা মাঠে যান না। তাই মঙ্গলবার সকালে বাধ্য হয়ে একগুচ্ছ ধান হাতে নিয়ে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যান। তিনি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজনকে বিষয়টি জানান।

কৃষক ফজলুর রহমান এ সময় তার ধানগুলোর ছবি তুলে রাখার কথা বলেন এবং জেলার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের মোবাইল নম্বর চান। এতে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন ওই কৃষি কর্মকর্তা। ফজলুর রহমানের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দেই; আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন; আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে! যা পারেন করেন গিয়ে! আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন তাহলে আপনাকে দেখে দিতাম…’।

এ সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগ দেন অফিসের অন্য স্টাফরাও। একপর্যায়ে কৃষক ফজলুর রহমানকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়। চোখের পানি মুছতে মুছতে অফিস থেকে বের হয়ে যান ফজলুর রহমান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার জানান, কৃষকের অভিযোগ শুনেছি। যদি উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কোনো দোষ থেকে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনা জানার পর এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম