সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ
শেরপুরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীকে হত্যায় প্রেমের ফাঁদ, গ্রেফতার ৯
শেরপুর উত্তর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৬ পিএম
শেরপুরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আব্দুল হালিম জীবনকে (৪৮) সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক নারী তাকে খুনিদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও দুই নারীসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন শেরপুর পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম। সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস উদ্দিন, তার ছেলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ, সদর উপজেলার ডাকপাড়া গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে মোবারক ওরফে মোস্তাক, শহরের পূর্বশেরী এলাকার ভাড়াটিয়া সিরাজগঞ্জ জেলার সাহাজাতপুর এলাকার মো. ফারুক আহম্মদের স্ত্রী রূপা বেগম, শেরপুর সদর উপজেলার কান্দাশেরীচর এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী মোনোয়ারা বেগম, সদর উপজেলার ডাকপাড়া গ্রামের আফিল উদ্দিনের ছেলে মো. রকিব হোসেন ওরফে জিহাদ ও একই গ্রামের হজরত আলীর ছেলে মো. কালু মিয়া। এ ছাড়া ঘটনার সময় জীবনের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আহত মো. রকিব হোসেন ওরফে জিহাদ ও মো. কালু মিয়া।
পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগম জানান, নিহত জীবনের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সাইদুর রহমান সুরুজ ও তার ভাইদের বিরোধ ছিল। জীবনের করা একটি মামলায় তার বাবা সুরুজ এক সপ্তাহ আগে জামিন পান। এরপর ছোট ভাই স্বপন (আমেরিকা প্রবাসী) জীবনকে শায়েস্তা করতে তাদের পারিবারিক বন্ধু সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে দায়িত্ব দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আব্দুর রউফ জীবনকে হত্যার ছক কষেন। তিনি আসামি রূপা বেগমকে ৫০ হাজার টাকার দিয়ে মোবাইলে জীবনের সঙ্গে প্রেমের ফাঁদ পাততে বলেন। জীবনও রূপার প্রেমের ফাঁদে পা দেন। ৩০ মার্চ বিকালে রূপা শেরপুর সদর থানার চুনিয়ারচর পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে জীবনকে ডেকে এনে আসামিদের হাতে তুলে দেয়। সেখানেই আব্দুর রউফসহ অন্যরা জীবনকে হত্যা করে লাশ নদীর পাড়ে ফেলে চলে যায়। পরে পুলিশ মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে রোববার ভোররাতে আসামিদের গ্রেফতার করে এবং জীবনের লাশ উদ্ধার করে।
নিহত জীবন প্রায় ২৫ বছর আগে ডিবি লটারি পেয়ে প্রথম স্ত্রীসহ আমেরিকা গিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। দুই বছর আগে তিনি দেশে এসে আর ফিরে যাননি। কিছুদিন আগে শহরের চাপাতলি মহল্লায় আতিয়া আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করেন।
তার দ্বিতীয় স্ত্রী আতিয়া বলেন, জমিজমার বিরোধে জীবনকে তার শ্বশুর ও দেবররাই হত্যা করিয়েছে। তিনি শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।