কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড সুনামগঞ্জের দুই উপজেলা
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৫ পিএম
সুনামগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে দুই উপজেলা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে । রোববার (৩১ মার্চ) রাত প্রায় ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় এ ঝড় বয়ে যায়। ঝড়োহাওয়ায় ফসল ও সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ের সঙ্গে বজ্রপাত ও শিলার তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শান্তিগঞ্জ উপজেলায়। এ উপজেলার পাগলাবাজার, শান্তিগঞ্জ, কামরূপদলং, আস্তমা ও রায়পুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক নারী, শিশুসহ নানা বয়সের লোক।
বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ও গাছগাছালি উপড়ে পড়ায় ভোররাত পর্যন্ত সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক সড়কসহ অভ্যন্তরীণ অনেক রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
ঝড়ের সময় গাছ উপড়ে পড়ে এবং ঘরের নিচে চাপা পড়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের কালিবাড়ী এলাকায় গাছ উপড়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। অটোচালকসহ পাঁচ যাত্রী আহত হন। গুরুতর আহত যাত্রী সাদ্দাম হোসেনকে সুনামগঞ্জ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাতেই সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বজ্রঝড়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের চন্দ্রপুর, ইনাতনগর, নবীনগর, কাঁদিপুর, ইসলামপুর, রায়পুর, রসুলপুর ও শত্রুমর্দন গ্রাম। বসতঘর হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এসব গ্রামের অধিকাংশ পরিবার।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই খোলা আকাশের নিচে ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। বিদ্যুৎ সংযোগ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, রাত ১টার দিকে আমরা সড়কে ভেঙে পড়া গাছ অপসারণ করে চলাচল স্বাভাবিক করেছি। বহু মানুষের কাঁচা ঘরবাড়ি, টিনশেড ঘর ভেঙে গেছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। আমরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স খোলা রেখেছি। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, ঝড়, বজ্রপাত, মাঝারি বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলায় আগাম জাতের বোরো ফসলের সামান্য ক্ষতি হতে পারে। কৃষি বিভাগের কর্মীদের সকালেই বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, রোববার রাত ১১টার দিকে তীব্র বেগে কালবৈশাখীর ঝড় আসে, সঙ্গে বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি। ঝড়ে গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে এবং তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।