রাজশাহীতে দাম অর্ধেক কমিয়েও তরমুজের ক্রেতা পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। রোজার শুরুতে রাজশাহীর বাজারে ১০০ টাকা কেজির কমে মিলেনি তরমুজ। কয়েক দিন পর থেকে ক্রেতারা তরমুজের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে আড়তগুলোতে তরমুজ পড়ে থেকে পচতে শুরু করে। ফলে এখন বিক্রেতারা তরমুজের দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন।
রোববার রাজশাহীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে আকারভেদে বিভিন্ন ধরনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। এরপরও ক্রেতা পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতারা না আসায় আড়তে ও দোকানে তরমুজ বিক্রি বেশ কমে গেছে। আড়তে পড়ে থেকে নষ্টও হচ্ছে কিছু তরমুজ। তারা বরিশাল পটুয়াখালীসহ দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা থেকে তরমুজ এনে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
রাজশাহীর শালবাগান নগরীতে তরমুজের বড় মোকাম। বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক ভরে তরমুজ এনে শালবাগান আড়তে রেখে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়। শালবাগান আড়তের চালানি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই বাড়তি দামে তরমুজ না কেনার ডাক দিয়েছেন। এতে অনেকেই সাড়া দিয়ে তরমুজ কিনছেন না বলে আমাদের ধারণা। ফলে তারাও জেলার বাইরে থেকে তরমুজের নতুন চালান আনা কমিয়ে করেছেন। তরমুজের বিক্রি না বাড়লে তাদের আর্থিক লোকসান হবে।
রাজশাহীর শালবাগান আড়তের তরমুজ ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চলতি সপ্তাহে তরমুজের দাম কমেছে। কিন্তু বাজার তরমুজের ক্রেতা নেই। যারা বড় বড় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করছেন তারা কিছুটা কিনছেন। এছাড়া বিত্তশালী লোকেরা কিছুটা কিনছেন। সাধারণ মানুষ কেউ তরমুজ কিনছেন না। প্রতি বছরই অনেকেই মৌসুমি ফল হিসেবে এর স্বাদ নিতে তরমুজ কেনেন কিন্তু এবার তারাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দাম কমে অর্ধেক হলেও ক্রেতা নেই।
দুলাল হোসেন নামে আরেক আড়তদার বলেন, রোজার শুরুতে যে দামে তরমুজ বিক্রি হয়েছে এখন আর সেই দাম নেই। দাম কমলেও ক্রেতারা আসছেন না দোকানে।
এদিকে শালবাগান ছাড়াও নগরীর নওদাপাড়া, গোরহাঙ্গা রেলগেট, স্টেশন বাজার, ভদ্রা মোড়, সাহেববাজার, কোর্ট বাজার, উপশহর মোড়, নিউমার্কেট এলাকার তরমুজের দোকান ঘুরে একই অবস্থা দেখা গেছে।
সেলিম নামে একজন ক্রেতা বলেন, তরমুজের দাম বেশি হওয়ায় এ বছর একটিও কিনেননি। দাম কমেছে শুনেছি। আরও কয়েক দিন পর একটা কিনবেন। কারণ রোজার মাস উপলক্ষে অপক্ব তরমুজ আনা হচ্ছে। ক্রেতারা কিনে ঠকছেন।
তবে তরমুজের দিক থেকে ক্রেতাদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আরও একটি কারণ জানিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন তরমুজ কম দামে পাওয়া যাচ্ছে ঠিকই; কিন্তু বাড়িতে নিয়ে কাটার পরে দেখা যাচ্ছে সেই তরমুজ কাঁচা বা অপক্ব। তরমুজের বীজের রঙ সাদা, তরমুজের ভেতরেও সাদা; কিন্তু তরমুজ একবার কাটলে সেই তরমুজ ব্যবসায়ীরা আর ফেরত নিতে চান না। এ নিয়ে হরহামেশাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ক্রেতাদের ঝগড়া বিবাদ হচ্ছে। তরমুজের ক্রেতা কমে যাওয়ার এটাও একটা কারণ।