লোকালয়ে বিপন্ন প্রজাতির অসুস্থ ঈগল
এটিএম নিজাম, কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৪, ১১:২৫ পিএম
লোকালয়ে পথহারা বিপন্ন প্রজাতির এক অসুস্থ ঈগল পাখি। ঈগলটি এখন কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের একটি সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের সেবায় সুস্থ হয়ে ওঠছে। গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে পড়েছিল ঈগলটি। একে উদ্ধার করে সামাজিক সংগঠন জ্ঞান সরোবর চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকদের প্রায় ১৫ দিনের চিকিৎসায় অনেকটা সুস্থও হয়ে ওঠেছে ঈগলটি। পুরোপুরি সুস্থ হলে এ ঈগলটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির অন্যতম সংগঠক আল মামুন।
১ মার্চ কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের বত্রিশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পাশে গুরুতর আহতাবস্থায় ঈগলটিকে ছটফট করতে দেখেন আল মামুন। বড় বাজারের তরুণ ব্যবসায়ী ও পরিবেশ সচেতন ব্যক্তি আল মামুন এগিয়ে গিয়ে বুঝতে পারেন আঘাতপ্রাপ্ত ঈগলটি উড়াল দিয়ে গাছে উঠার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। প্রায় দুই ফুট উচ্চতার চার কেজি ওজনের ঈগলটিকে উদ্ধার করে তিনি নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। আল মামুন ঈগলটিকে বাড়িতে নিয়ে প্রাথমিক সেবা দেন। তারপর তাদের সামাজিক সংগঠন জ্ঞান সরোবরের অন্য সংগঠকদের খবর দেন। তারা সবাই মিলে ঈগলটিকে কিশোরগঞ্জ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যান। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবায় ইতোমধ্যেই ঈগল পাখিটি অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কয়েক মাসের মধ্যেই হয়তো পুরো সুস্থ হয়ে যেতে পারে।
ঈগলটি বর্তমানে আল মামুনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তিনি ঈগলটিকে চিকিৎসা ও খাবার দিয়ে সুস্থ করে তুলছেন। খাবার হিসাবে মাছ দিচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভিটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, ঈগলটিকে প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। এ ঈগলটির বয়স ৪০-এর ওপরে হতে পারে। কেন না, এ পাখি ৭০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারলেও ৪০ বছর বয়সের পর বেশ কিছুদিনের জন্য উড়াল দেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এজন্য অনেক দিন তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে নতুন করে নখ ও পাখ গজানোর পর আবার দুর্দান্ত উড়াল ক্ষমতা ফিরে পায়। এ পাখিটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠতে কয়েক মাস চিকিৎসা লাগতে পারে। বিরল প্রজাতির ঈগলের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন প্রায়। এ ধরনের পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।