Logo
Logo
×

সারাদেশ

একই কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ৩ নারী জনপ্রতিনিধি

Icon

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৪, ১১:০৩ পিএম

একই কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন ৩ নারী জনপ্রতিনিধি

বাগাতিপাড়ায় চলতি এসএসসি পরীক্ষায় একই কেন্দ্রে অংশ নিয়েছেন সাবেক-বর্তমান তিন নারী জনপ্রতিনিধি। পরীক্ষায় পাশ করে তাক লাগাতে চান এসব নারী জনপ্রতিনিধি। সম্প্রতি তাদের এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার খবর সামনে এলে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। 

ওই তিন নারী জনপ্রতিনিধি পরীক্ষার্থীরা হলেন- বাগাতিপাড়া পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মুর্শিদা বেগম, পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য শিলা খাতুন এবং একই ওয়ার্ডের সাবেক সংরক্ষিত নারী সদস্য শাহানাজ পারভীন। তারা সবাই বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী। এর মধ্যে শিলা খাতুন কারিগরি শাখার ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্রিজারভেশন ট্রেডে এবং অপর দুইজন ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডের পরীক্ষার্থী। 

বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শেষে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অল্প বয়সে বিয়ে এবং পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে পড়াশোনা থমকে যায় তাদের। তীব্র ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সেই সময় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাদের। তবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর নানাভাবে উচ্চতর শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। সে কারণেই আবারো স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রেরণায় তারা ফের শিক্ষাজীবনে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। বয়সকে তুচ্ছ করে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণিতে। 

আর এ বছর নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেন। ইউপি সদস্য শিলা খাতুন (৩৬) জানান, অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় পরিবার থেকে তাকে বিয়ে দিয়ে দেন। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়াশোনার আক্ষেপটা থেকে যায়। ভোটে বিজয়ের পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। এরপর স্বামীর অনুপ্রেরণায় তিনি আবার লেখাপড়া শুরু করেছেন। 

অপরজন সাবেক ইউপি সদস্য শাহানাজ পারভীন (৩৯) বলেন, ছোট ভাইবোনদের পড়াশোনার কথা চিন্তা করে অল্প বয়সে বিয়ে দেয় তার পরিবার। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা থেকেই দীর্ঘসময় পর তার কারিগরি শাখায় ভর্তি হওয়া। এসএসসি পাশ করলে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন এই জনপ্রতিনিধি। 

মুর্শিদা বেগম (৪৩) জানান, প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিরই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 

এ বিষয়ে ওই পরীক্ষার কেন্দ্রের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামসুন্নাহার বলেন, তাদের এ আগ্রহ দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবেন। তারা শেষপর্যন্ত লেখাপড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পেরেছেন- সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরিবারের পাশাপাশি জনসেবামূলক বিভিন্ন কাজে জনপ্রতিনিধিরা নিয়োজিত থাকেন। সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বয়স কোনো বাধা হতে পারে না, এই তিন জনপ্রতিনিধি তার দৃষ্টান্ত।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম