ছেলেকে মারধর-বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের বিচার চাইলেন বাবা-মা
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম
রাজশাহীতে তুচ্ছ ঘটনায় এক তরুণকে মারধর ও তাদের বসতবাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক দম্পতি। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে রিপন আলী বাবু ও তার স্ত্রী পান্না বেগম এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
তাদের বাড়ি নগরীর আসাম কলোনি এলাকায়। রিপন পেশায় ইলেক্ট্রনিক্স মিস্ত্রি।
রিপন আলী বাবুর ছেলে মো. আরিফ (২২) আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার মাথায় গুরুতর জখম রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর শালবাগান এলাকায় এবং পরে রাতে বাড়িতে গিয়ে আরিফের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া হামলাকারীরা বাড়ির সঙ্গেই থাকা আরিফের বাবার ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য সার্ভিসিংয়ের দোকানে হামলা চালায়। এ সময় তারা সার্ভিসিংয়ের জন্য আসা সাতটি টেলিভিশন ভাঙচুর করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরিফের বাবা রিপন আলী বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে নগরীর শালবাগান এলাকায় পেট্রল পাম্প থেকে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে আরিফ রাস্তায় উঠছিল। এ সময় নগরীর রবের মোড় বৌবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. বাবলু (৫০) মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন। আরিফ মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় ওঠার সময় হর্ন দেয়। কিন্তু তা না শুনে হেঁটেই যাচ্ছিলেন বাবলু। তখন মোটরসাইকেলে থাকা আরিফের হাতের সঙ্গে বাবলুর হাতের ধাক্কা লাগে।
এ সময় বাবলু ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফকে সেখানেই বেধড়ক মারধর শুরু করে। পরে স্থানীয় লোকজন আরিফকে রক্ষা করেন এবং বাবলুকে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর আরিফের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন আরিফের মা পান্না বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বাবলুর ছেলে তানভীর একটি কিশোর গ্যাংয়ের নেতা। এই কিশোর গ্যাংয়ের ২৫-৩০ জনকে নিয়ে এসে বাবলু তার বাড়িতে হামলা চালান। তারা বাড়ি গিয়েই আরিফকে মারধর শুরু করেন বাবলু ও তার ছেলে তানভীর। ছেলেকে রক্ষা করতে গেলে পান্না বেগমকে লাথি দিয়ে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়। আরিফকে মারধরের সময় মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তি যান। তখন সুযোগ পেয়ে আরিফ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ কারণে হামলাকারীরা মোহাম্মদ আলীকেও মারধর করে।
তিনি আরও জানান, এরপর হামলাকারীরা বাড়ির সঙ্গেই থাকা দোকানে ভাঙচুর চালায়। দোকানে সার্ভিসিংয়ের জন্য আসা সাতটি টেলিভিশন ভেঙে ফেলে তারা। এরপর আরিফ ও তার মা পান্না বেগমকে খুঁজতে তারা প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায়। না পেয়ে তারা চলে যায়। পরে সেদিনই মামলা করতে ছেলে আরিফকে নিয়ে চন্দ্রিমা থানায় যান পান্না বেগম। সেখানে দেখেন, বাবলুই আগে থেকে থানায় বসে আছেন।
পান্না বেগম তার ছেলের রক্তাক্ত মাথা দেখিয়ে পুলিশকে জানান, এই বাবলুই তার বাহিনী নিয়ে হামলা করে তার ছেলেকে আহত করেছেন। তিনি বাবলুকে আটক করার অনুরোধ জানান। কিন্তু পুলিশ বাবলুকে আটক করেনি। ছেলেকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে পান্নাকে থানা থেকে চলে যেতে বলেন। পরে পান্না তার ছেলেকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে পান্না বেগম হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়ে থাকায় অভিযুক্ত বাবলুর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, মারামারির একটা ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষ থানায় মামলা করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এখন মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তেই সবকিছু বোঝা যাবে।