ক্রসফায়ারের হুমকি
সাভারে এসআই’র বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন, সাভার (ঢাকা)
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৬ এএম
রাতের আঁধারে নিরীহ এক পোশাককর্মীকে ধরে এনে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকার সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-মামুন কবিরের বিরুদ্ধে।
২১ ফেব্রুয়ারি রাতে কলমা এলাকার বাসিন্দা জিহাদ হাসান শান্তর (২৬) কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন তিনি। এর আগেও তিসি চাঁপাইন এলাকার সজল নামের এক শ্রমিককে আটক করে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেন। তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক পেটানোর অভিযোগও রয়েছে।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই মামুন বলেন, জিহাদের ভাই হাসিব হাসান প্রান্তের নামে সাভার মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ওই রাতে তাকে আটক করতে যাই। তার ভাইকে আটকের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এসব অভিযোগ করেন। মূলত সব অভিযোগ মিথ্যা।
ভুক্তভোগী জিহাদ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী থানার মহাদিপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম লিটনের ছেলে। তিনি সাভারের কলমায় ভাড়া থেকে পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
জিহাদ বলেন, ওই রাতে ২টার দিকে দরজায় কড়া নাড়েন এসআই মামুন ও তার সহযোগী কয়েকজন কনস্টেবল। দরজা খুলতেই আমাকে হাতকড়া পরান মামুন। কারণ জানতে চাইলে তারা ওয়াকিটকি ও রাইফেল বাঁট দিয়ে আমাকে আঘাত করে টেনেহেঁচড়ে গাড়িতে তোলেন। এরপর তারা আমার বাবার বাসায় নিয়ে যেতে বলেন। পরে তারা আমার বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে এসআই মামুন আমাকে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেন। বাধ্য হয়ে বাবা ধার করে টাকা দিলে আমাকে ছেড়ে দেন।
এছাড়া মাস দুয়েক আগে এসআই মামুন সাভার সদর ইউনিয়নের চাঁপাইনে কয়েকটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে নিরীহ কলমিস্ত্রি সজলকে আটক করেন। পরে তার স্ত্রীর কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেন।
সজল বলেন, আমি দিন আনি দিন খাই। আমার নামে কোনো মামলা নেই। অথচ এসআই মামুন রাতে আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যান। পরে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাকে ছেড়ে দেন। এখন আমি ওই দেনার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আমার সংসারে প্রায় প্রতিদিন ঝগড়া লেগেই আছে।
সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম বলেন, রাত ১১টার দিকে কলমিস্ত্রি সজলকে পুলিশ মারধর করার সময় পাশের একটি দোকানে আমি চা খাচ্ছিলাম। তার কান্নার আওয়াজ শুনে বাড়ির ভেতরে গেলেই আমাকে গালাগাল করেন এসআই মামুন। একপর্যায়ে তিনি আমাকে কিল-ঘুসি মেরে মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে এক ঘণ্টা আটকে রাখেন। পরে অন্যান্য সংবাদকর্মীর সহযোগিতায় ছাড়া পাই।
এ ঘটনার পরদিন এসআই মামুনসহ চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করি। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।