Logo
Logo
×

সারাদেশ

যমুনার মোটরসাইকেলের চাহিদা বেশি

Icon

এ হাই মিলন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম

যমুনার মোটরসাইকেলের চাহিদা বেশি

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৮তম আসর প্রায় শেষমুহূর্তে পৌঁছেছে। আর মাত্র দুদিন থাকলেও ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা আর ক্রেতাদের দাম নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বিস্তর।
মাসব্যাপী মেলা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা ও আশপাশের জেলার লাখ লাখ মধ্যবিত্ত পরিবার বিশাল ছাড়ে বার্ষিক কেনাকাটা ও বিনোদনের জন্য মেলায় আসেন।

১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাণিজ্যমেলা হলেও তিন বছর ধরে পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

মেলায় যমুনা প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম বলেন, নতুন আইটেম এসিতে বেশ সাড়া পেয়েছি আমরা। রোববারও এক টন, দুই টন এসি বেশ কয়েকটি বিক্রি হয়েছে। মেলার শেষে ছাড়ে অনেকেই কিনতে এসেছেন যমুনার পণ্য।

আগারগাঁওয়ের মোহাম্মদ তৌহির উদ্দিন কিনেছেন পেগাসাসের ভিক্টোরি মোটরসাইকেল। তিনি বলেন, দেশীয় পণ্যে যমুনা নিয়ে এসেছে এক অবিস্মরণীয় অবদান। জ্বালানি সাশ্রয়ী মোটরসাইকেলটি আমি কিনেছি আরও কয়েকটি কোম্পানির মোটরসাইকেল দেখে তুলনা করে। আমার ভাইও দুই বছর আগে যমুনার মোটরসাইকেল কিনেছেন। আমি দেশীয় পণ্য হিসাবে এবং হোম ডেলিভারি পেয়ে কিনে নিলাম মোটরসাইকেলটি।

মেলায় তৈজসপত্র, কাপড়চোপড়, অলংকার, প্লাস্টিক সরঞ্জাম, খাদ্যদ্রব্যসহ নানারকম জিনিসপত্রের দোকান রয়েছে। বাংলাদেশি বড় কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানও অংশ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক কিছু প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

পূর্বাচলে ২০ একর জমির ওপর বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারটি নির্মিত হয়েছে। প্রদর্শনী কেন্দ্রে ৭ হাজার ১৭৩ স্কয়ার মিটারের দুটি পৃথক প্রদর্শনী হল রয়েছে।

মেলায় লোকজনের আসা-যাওয়ার সুবিধার জন্য বিআরটিসির দোতলা বাসের সেবা দেওয়া হচ্ছে। কুড়িল বিশ্বরোডের মোড় থেকে এসব বাসে করে মেলা পর্যন্ত যাওয়া যায়। মেলায় এবার বেশকিছু আকর্ষণীয় স্টল ও প্যাভিলিয়ন থাকলেও নজর কেড়েছে কারুপণ্যের প্যাভিলিয়ন। বেশকিছু দর্শনার্থীদের আগ্রহ আবার কার পার্কিং স্ট্যান্ডে।

ঢাকার শাহবাগ থেকে আসা গৃহিণী আসমা আক্তার বলেন, এতদিন শুনতাম কারাগারে বসে কয়েদিরা পণ্য তৈরি করে। এখন নিজ চোখে দেখলাম ও কিনলাম।

কথা হয় কারা অধিদপ্তরের প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ ও খুলনা জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. জামাল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, সারা দেশে ৬৮টি কারাগারের ৩৩টি কারাগারেই পণ্য তৈরির কারখানা ও হস্তশিল্পের সুযোগ রয়েছে। কয়েদিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দক্ষ করতেই সরকারের এমন উদ্যোগ। আমরা বেশ সাড়া পেয়েছি। ভালো পণ্য কম দামে পাচ্ছে। এসব বিক্রীত পণ্যের ৫০ ভাগ মুনাফা সংশ্লিষ্ট কয়েদিরা পেয়ে থাকেন।

কথা হয় গাজী গ্রুপের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও প্যাভিলিয়নের দায়িত্বরত কর্মকর্তা শেখ ফরিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেলায় ৩০ দিনে ভালো সাড়া পেয়েছি। বিক্রিও ভালো হয়েছে। 
মেলায় গাড়ির পার্কিং স্ট্যান্ড নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের একটি খোলা বুথ চোখে পড়ার মতো। দর্শনার্থীরা একবার হলেও তা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। অনেকে বিষয়টি জানতে প্রদর্শনী কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী মুড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আমিনা খাতুন বলেন, বাণিজ্যমেলায় তো প্রতিদিন আসার কিছু নেই, একবার এলেই যথেষ্ট। তবে পরিবারের জন্য দরকারি কিছু তৈজসপত্র কেনার ইচ্ছা থেকে প্রতিবছর এই মেলায় আসা হয়।

মেলায় ঘুরতে আসা কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের মহাসচিব মীর আব্দুল আলীম বলেন, মেলা ঘুরে দেখলাম তুলনামূলক দর্শনার্থী কম। তবে পূর্বাচলে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত এবারের মেলায় যাতায়াত পরিবেশ ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা খুবই ভালো লাগল। আর মেলা প্রথমেই জমবে- এমন আশা করা যায় না। ক্রমেই জমবে। ঢাকা বাইপাস সড়ক ৮ লেন হলে এ মেলার পরিধি বাড়াতে হবে।

এদিকে মেলায় থাকা ব্যবসায়ীদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ লক্ষণীয়। মেলার সময় বাড়াতে ব্যবসায়ীরা দৌড়ঝাঁপ করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। ব্যবসায়ী হাসান ইন্তেসার বলেন, আমরা তিনদিনের সময় চেয়ে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে আবেদন করেছি। তারা নাকচ করলেও একদিন মেলার সময় বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাতে আমাদের কিছুই হবে না।

লোকসানের আশঙ্কা জানিয়ে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, এবার মেলার সময়সূচি নিয়ে শুরু থেকে জল ঘোলা হয়েছে। সাধারণত ১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্য মেলা শুরু হলেও নির্বাচনের কারণে এবার মেলা পিছিয়ে যায়। পরে ১৫ জানুয়ারি মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও উদ্বোধন হয় ২১ জানুয়ারি। মেলার শুরুতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল। যে টাকায় বরাদ্দ নিয়েছি, সে টাকা তুলতে পারব না। লোকসান হবেই। তাই আমাদের কথা বিবেচনা করে সময় বাড়ানো দরকার।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম