যমুনা প্যাভিলিয়নে ক্রেতার ভিড়

এ হাই মিলন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এবার দর্শনার্থীর আনাগোনার চেয়ে বিক্রি কম। তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা লোকসান এড়াতে নিয়েছেন অপকৌশল। তাদের বরাদ্দ পাওয়া স্টলকে আকারে ছোট করে সাব-ভাড়া (উপভাড়া) দিয়েছেন। এই ফাঁকে পাশাপাশি নিুমানের পণ্য ঢুকেছে মেলায়। এসব পণ্য বিক্রেতারা বেশিরভাগ রাজধানীর ফুটপাতের হকার আর নিউমার্কেট, গুলিস্তানের মৌসুমি ব্যবসায়ী।
মেলা ঘুরে শুক্রবার দেখা গেছে, মূল পরিকল্পনায় নেই এমন অসংখ্য স্টলে ছেয়ে গেছে মেলা প্রাঙ্গণ। প্রায় প্রতিটি বড় প্যাভিলিয়নের পাশের খালি জায়গায় অবৈধভাবে এসব স্টল বসেছে। বেশিরভাগই খাবারের দোকান। চলাচল পথ বন্ধ করে বসেছে ছোট ছোট পসরা। এ যেন মেলায় ভেতরে ফুটপাতের মেলা। অভিযোগ রয়েছে, এসব স্টলের কিছু অনুমোদন দিয়েছে খোদ মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করছে তারা।
মেলায় এক আইসক্রিম স্টলের বিক্রেতা আমানুল্লাহ বলেন, একটি স্টল নিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। টাকা দিতে হচ্ছে দালালদের, যারা ইপিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে মেলার স্টল বসানোর স্থান ঠিক করে দিচ্ছেন। আইসক্রিম না চলায় আমাদের স্টলের এক পাশ ভাড়া দিয়েছি।
বিরিয়ানি ব্যবসায়ী মজিবর মিয়া বলেন, ভেতরে বৈধভাবে যারা হোটেল পেয়েছেন তাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছি। ৪ লাখ টাকা দিয়েছি শুধু ডেগ বসানোর জায়গার জন্য।
মেলায় ইরানি পণ্যের সাইনবোর্ড দেওয়া স্টলে বিক্রি হচ্ছে কিয়াম প্রেসার কুকারসহ নানা তৈজসপত্র। এ স্টলের সাব-ভাড়া পাওয়া বিক্রয়কর্মী তামান্না বলেন, ১৮ দিনের জন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা ভাড়া দিয়েছি। এ স্টলের বিক্রয়কর্মী ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা লোকসানে আছি। লোকসান কমাতে কিছু অংশে অন্য ব্যবসায়ীদের সুযোগ দিয়েছি।
মেলার মূল ভবনের পূর্বদিকে অসংখ্য কোট আর ব্লেজারের স্টল। বিক্রেতারা হাঁকডাক করে নিুমানের পণ্য বিক্রি করছেন। তবে দাম কম হওয়ায় নিু আয়ের লোকজন ভিড় করছেন। বিক্রয়কর্মী আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পাওয়া স্টল। এসব স্টল কম দামে পাওয়া যায়। তাই মেলার আয়োজকদের ম্যানেজ করে কিছু স্টল নিয়েছি। তবে ইপিবি সচিব বিবেক সরকার বলেন, স্টলগুলো উপভাড়া হয়েছে কিনা জানি না। বাকি বিষয়গুলো নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে মেলার সামনের ফটকে বসেছে ভাসমান হকারদের ভ্যান আর ছোট ছোট দোকান। অভিযোগ রয়েছে, মেলার পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ এসআই কৃষ্ণ লাল সরকারকে ম্যানেজ করে এসব দোকান বসানো হয়েছে। তবে কৃষ্ণ লাল সরকার বলেন, এটা স্থানীয় নেতাকর্মী ও ট্রাফিক পুলিশের লোকজন দেখছেন। আমি মেলার বাইরে হস্তক্ষেপ করি না। এদিকে বাইপাস সড়কের মেলা অঞ্চলের টিআই পরিদর্শক জুলহাস মিয়া বলেন, মেলার গেটের সামনের অংশ আমরা দেখি না। আমরা সড়কের যানজট নিয়ে ব্যস্ত আছি।
যমুনা প্যাভিলিয়নে ক্রেতার ভিড় : আজ মেলায় লোকসমাগম তুলনামূলক কম হলেও যমুনা প্যাভিলিয়নে রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি হয়েছে বলে জানান ডেপুটি ম্যানেজার রাকিব আহমেদ। তিনি বলেন, আজ ১০টির বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। নতুন নতুন মডেলের ফ্রিজ ছাড়ে পাওয়ায় বিক্রি বেশি।
যমুনার যুগলবন্দি অফার কিনেছেন রূপসী থেকে আসা আরিফ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, অফারটি আসলে ভালো। আমি এবং আমার স্ত্রী মিলে এ অফারটি নিলাম। সঙ্গে তো হোম ডেলিভারি আছেই। অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি থেকে যমুনার পণ্য সব দিক দিয়ে ভালো।
এদিকে আজ যমুনার পেগাসাস মোটরসাইকেল ফেভিও বেশ কয়েকটি বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, আমি মোটরসাইকেলটি কিনেছি, কারণ এর তেল খরচ খুব কম। দেখতে সুন্দর, যন্ত্রাংশগুলোও হেভি মনে হচ্ছে। এছাড়া পেয়েছি ছাড় ও হোম ডেলিভারি।