আখেরি মোনাজাত শেষে ঘরমুখো মুসল্লিদের ভিড়, যানবাহন সংকট
মো. জাকির হোসেন, লুৎফুজ্জামান লিটন ও মো. আনোয়ার হোসেন, টঙ্গী (গাজীপুর)
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:২১ পিএম
বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের পর ঘরমুখো মুসল্লিদের ভিড় লেগেছে। যাত্রী বেশি হওয়ায় যানবাহন সংকটের কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এতে সুযোগ পেয়ে যানবাহনগুলো বেশি ভাড়া আদায় করেছে।
রোববার বেলা ১১টা ১৭ মিনিট থেকে ১১টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা বাড়ি ফেরার পথে বিড়ম্বনায় পড়েন।
আখেরি মোনাজাত শেষ হওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেওয়া মানুষ একযোগে নিজ নিজ গন্তব্যে ফেরার চেষ্টা করেন। এ সময় মোনাজাত করতে আসা মানুষগুলো শুরু করে দেয় হুড়োহুড়ি এবং আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। এতে টঙ্গীর আশপাশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট ও মানবজট। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে হেঁটেই গন্তব্যের দিকে রওনা দেন।
ইজতেমার আখেরি মোনাজাত শেষে একসঙ্গে লাখ লাখ মুসল্লি যার যার গন্তব্যস্থলে রওনা হলে টঙ্গী রেলস্টেশনে তিলধারণের জায়গা ছিল না। মুহূর্তের মধ্যেই মুসল্লিবাহী ট্রেনগুলোতে ঠাঁই নেই অবস্থা হয়ে যায়। ট্রেনের কামরাগুলো ছাড়াও ছাদে ও ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে এবং পেছনে দাঁড়িয়ে অনেক মুসল্লিকে যেতে দেখা গেছে। এতে তাদের ভোগান্তি চরমে উঠে।
জামালপুরের পিয়ারপুর এলাকা থেকে ২৬ জনের একটি জামাত নিয়ে ইজতেমা ময়দানে এসেছিলেন আবু সাঈদ, আদম আলী, মো. সোহাগ ও আমির হোসেন। তারা জানালেন, আমাদের মধ্যে কয়েকজন ট্রেনের ভেতরে জায়গা পেলেও আমরা জায়গা পাইনি। তাই ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনের খালি জায়গায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।
জানা যায়, মোনাজাত উপলক্ষে শনিবার মধ্য রাত থেকে ইজতেমা ময়দানকে কেন্দ্র করে ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় গণপরিবহণ বন্ধ করে পুলিশ। এতে ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা নির্ধারিত স্থানে গাড়ি রেখে হেঁটে ময়দানে আসেন। মোনাজাতের পর বিক্ষিপ্তভাবে নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বল্প আকারে চালু হয়। আবার ব্যক্তিগত বাইক ও গাড়িগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় সংরক্ষিত এলাকায় ছোট ছোট যানবাহন অল্প করে চলাচল করে। এতে দূরে রেখে আসা গাড়ির কাছে যেতে মুসুল্লিদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
কিশোরগঞ্জ থেকে ইজতেমায় আসা ইমরান মিয়া (৬৫) জানান, গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তা খুললে তারপর যাব।
সিলেটের যাত্রী ইলিয়াস মিয়া (৬০) বলেন, গাড়ি মিরের বাজারে রেখে আসছি। এখন হেঁটে গাড়ির কাছে যাচ্ছি।
এদিকে শনিবার মধ্যরাত থেকে ইজতেমা ময়দানকেন্দ্রিক প্রায় ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় অনেক গণপরিবহণ রাস্তায় বের হয়নি। শুধুমাত্র ইজতেমায় রিজার্ভ করা গাড়ি বেশি দেখা গেছে। ফলে সড়ক মহাসড়কে গাড়ি কম থাকায় ঘরমুখো মুসল্লিদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এ সুযোগে ছোট ছোট পরিবহণ বেশি ভাড়া আদায় করেছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন অনেকেই।