আমিন আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত তুরাগতীর
টঙ্গী পশ্চিম, পূর্ব ও শিল্পাঞ্চল (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
অশ্রুসিক্ত নয়নে কায়মনোবাক্যে মহান আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদের মধ্য দিয়ে আজ রোববার শেষ হলো ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা। সমগ্র বিশ্বের মানুষের নিরাপত্তা, ঐক্য, মুক্তি এবং ইহ ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনা করে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে মিনতি জানানো হয়।
গভীর ভাবাবেগপূর্ণ পরিবেশে ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে সকালের আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে মহামহিম ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে অপার করুণা ও অশেষ রহমত কামনা করেছেন দেশ-বিদেশের অগণিত ধর্মপ্রাণ মুসলমান।
লাখো মানুষের কাঙিক্ষত আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন দিল্লির মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। তিনি বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা সাদ আহমদ কান্ধলভীর বড় ছেলে।
বেলা ১১টা ১৭ মিনিট থেকে শুরু করে ১১টা ৪৩ মিনিট পর্যন্ত দীর্ঘ ২৬ মিনিট স্থায়ী আবেগঘন আখেরি মোনাজাতে অযুতকণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে রাহমানুর রাহিম আল্লাহর মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব। মনিব-ভৃত্য, ধনী-গরির, নেতাকর্মী নির্বিশেষে সব শ্রেণিপেশা-গোষ্ঠীর মানুষ পরওয়ারদেগার আল্লাহর দরবারে দুহাত তুলে নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
সকালের আকাশ কাপিয়ে ধ্বনি উঠে- হে আল্লাহ, হে আল্লাহ।মোবাইল ফোনে এবং স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাদে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তুলেছেন পরওয়ারদিগারের শাহি দরবারে। গুনাহগার, পাপিতাপি বান্দা প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় বুক ভাসিয়েছেন।
দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লি ছাড়াও বিশ্বের ৬৫ দেশের প্রায় ৯ হাজার ২৩১ তাবলীগ অনুসারী বিদেশি মেহমান আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন।
সকাল থেকে দিক নির্দেশনামূলক বয়ানের পর লাখো মানুষের প্রতীক্ষার অবসান ঘটে সকাল সাড়ে ১১ টা ১৭ মিনিটে। জনসমুদ্রে হঠাৎ নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তুলেন আল্লাহর দরবারে। আখেরি মোনাজাতকে ঘিরে রোববার রেকর্ডসংখ্যক মুসলমান যেন ভেঙে পড়েছিলেন টঙ্গীতে। সব পথের মোহনা হয়ে উঠে তুরাগতীরের ইজতেমা নগরী। রাজধানী ঢাকা ছিল প্রায় ফাঁকা।
টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অনেক কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান, অফিসসহ সবকিছু ছিল বন্ধ। সবার প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লিদের সঙ্গে মোনাজাতে শরিক হয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২৬ মিনিটের আবেগঘন মোনাজাতে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী প্রথম ১২ মিনিট মূলত পবিত্র কুরআনে বর্ণিত দোয়ার আয়াতগুলো উচ্চারণ করেন। শেষ ১৪ মিনিটে তিনি আরবি ও উর্দু ভাষার সংমিশ্রণে দোয়া করেন।