Logo
Logo
×

সারাদেশ

দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, রোদের ঝলকানিতে স্বস্তি

Icon

দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম

দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, রোদের ঝলকানিতে স্বস্তি

দিনাজপুরে দুদিন ধরে দিনের বেলায় সূর্যের প্রখরতা কিছুটা বাড়লেও অব্যাহত রয়েছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। বিকাল হলেই অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। হাড় কাঁপানো এই তীব্র শীত অব্যাহত থাকছে পরের দিন প্রায় দুপুর পর্যন্ত।

দিনাজপুরে সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার এটিই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

দিনাজপুর আঞ্চলিক পর্যবেক্ষণাগারের দেওয়া তথ্যমতে চলতি জানুয়ারি মাসের শুরু থেকেই দিনাজপুরে কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। এর মধ্যে দু-একদিন ১১ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠলেও বেশির ভাগ দিনেই তাপমাত্রা বিরাজ করে ৭ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। অব্যাহত থাকে শৈত্যপ্রবাহ।

এরই মধ্যে রোববার দিনাজপুরে তাপমাত্রা নেমে আসে ৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে; যা চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। সোমবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, সোমবার এটিই সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এদিকে দুদিন ধরে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করলেও দিনের বেলায় কিছুটা বৃদ্ধি পায় সূর্যের তাপ। প্রায় মাসব্যাপী তীব্র শীত, কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের যাঁতাকলে পিষ্ট হওয়া মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। গত চারদিন ধরে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যের আলো স্পর্শ করছে মৃত্তিকা। আর তাতেই যেন প্রাণ ফিরে পাবার উপক্রম হয়েছে মানুষসহ প্রাণিকুল ও প্রকৃতির। খুব বেশি তাপ না থাকলেও ঝলমলে রোদ থাকছে সূর্যাস্ত অবধি। শ্রমজীবী মানুষদের মধ্যে ফিরেছে কর্মচঞ্চল।

দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সূর্যের তাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘরের জমানো কাপড় শুকাতে দিয়েছেন মানুষ।

সোমবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরল পৌর এলাকার সন্ধ্যা রানী রায় বলেন, বেশ কয়েক দিন থেকেই কাপড় শুকাতে পারিনি। তাছাড়াও লেপ-কম্বলগুলোও ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। তাই জমে থাকা কাপড় ধোয়ার পাশাপাশি রাতের লেপ-কম্বলগুলো রোদে গরম করে নিচ্ছি।

গত প্রায় এক মাস ধরে হিমেল বাতাস আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় সন্ধ্যার পর হতেই ঘরমুখো হতে শুরু করছে মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত বাড়ির বাইরে বের হতে পারছে না। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো কুয়াশা ঝরেছে। দিনের পুরোটা সময় দেখা মেলেনি সূর্যের আলোর। সেই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। গত চার দিনে কুয়াশা যেমন কমেছে তেমনি কমেছে বাতাসের গতিও।

রোদের দেখা পেয়ে আনন্দিত কৃষিনির্ভর এই দিনাজপুর জেলার কৃষকরাও। দিনাজপুর সদর উপজেলার নশিপুর গ্রামের কৃষক হাফিজউদ্দীন বলেন, সারা দিন কুয়াশা ও আর রোদের দেখা না পাওয়া যাওয়ায় বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছিলাম বীজতলা। মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। দুদিন থেকে রোদ দেখা দেওয়ায় আর কোনো চিন্তা নাই। এখন সময়মতো বোরো ধান রোপণ করতে পারব।

অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারণে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন আলুচাষিরাও। তবে দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুজ্জামান বললেন, কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ফসলের বড় ওষুধ হচ্ছে সূর্যের আলো। ঠান্ডাতে ফসলের ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হয় কুয়াশায়। যেহেতু গত চার দিন ধরে দিনের বেলা রোদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং ফসল নষ্ট হওয়ার চিন্তা কিছুটা কমেছে। কৃষকের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। তারপর কৃষি বিভাগের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী আমরা মাঠে আছি। কোন সময় কোন কীটনাশক কিংবা সার প্রয়োগ করতে হবে তার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম