পাবিপ্রবির কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকির অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:১২ পিএম
খেলাধুলার সরঞ্জাম কেনার নামে চাঁদা না দেওয়ায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার শেখ শাহজামালকে হেনস্তা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তা।
একই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরে ওই ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার একটি অডিও ক্লিপও ফাঁস হয়েছে। তাতে ভুক্তভোগী কর্মকর্তার সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাগবিতণ্ডার কথা শোনা যায়। অডিওতে একপর্যায়ে একজনকে শোনা যায় কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিতে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাফাত বিন ইসলাম শোভন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমাছুর রহমান অয়ন, হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির রায়হান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. লিখন এবং তানভীর শান্ত। অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রোববার দুপুর পৌনে ২টার দিকে একটি নম্বর থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার শেখ শাহজামালের মোবাইলে কল আসে, তিনি তখন ট্রেজারার অফিসে ছিলেন। ফোন পেয়ে তিনি নিজ দপ্তরে গেলে সেখানে অয়ন, শোভন, লিখন, জহির, শান্তসহ ১৫-১৮ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী তাকে হেনস্তা করেন এবং মেরে ফেলার হুমকিসহ শারীরিকভাবে আঘাত করেন। এ সময় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয় এবং না গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা শাহজামাল সাংবাদিকদের বলেন, দুপুরে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আমার কাছে এসে টাকা দাবি করেন; কিন্তু আমি অফিসিয়াল প্রসিডিউর ছাড়া কাউকে টাকা দিতে পারি না। এর আগে আমাদের এক শিক্ষক রাহি স্যারের মাধ্যমে ওদের প্রায় ৪০ হাজার টাকা দিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলার কিছু সরঞ্জাম বাবদ কিনে দেওয়া হয়েছে। ওদের নাকি ওগুলা শেষ হয়ে গেছে এবং নতুন করে কেনার জন্য আমার কাছে টাকা দাবি করে। আমি বললাম তোমরা একটা লিখিত আবেদন করো তারপর আমি সেটা দেখব; কিন্তু ওরা বলল এখনই টাকা দিতে হবে। আমি বললাম অফিসিয়াল প্রসিডিউর ছাড়া করতে পারব না। একপর্যায়ে ওরা আমাকে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং বলে- ‘এখনই রিজাইন দিয়ে পাবনা ছাড়বি না হলে তোকে খুন করে ফেলব।’ এর আগেও ওরা আমাদের সঙ্গে এমন করেছে, আমি অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু বিচার পাইনি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, কয়েক দিন ধরে ওই কর্মকর্তা ছেলেপেলেদের ফেদার দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আজ দিচ্ছেন কাল দিচ্ছেন বলে তাদের ঘোরাচ্ছেন। আজকে নাকি তার অফিসে ছেলেদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে, এইটুকুই জানি। ওদের মধ্যে দুই-একজন ছাত্রলীগের কেউ থাকতে পারে। বেশিরভাগই সাধারণ শিক্ষার্থী। এখন যেহেতু উনি বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই এটা দেখবে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, আমিও বিষয়টা শুনেছি। শুনেছি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এখন আসলে কী হয়েছিল সেটা জানার চেষ্টা করছি।