রংপুর নগরীতে নবজাতক বিক্রির ঘটনায় অভিভাবকহীন ও আশ্রয়হীন হয়ে পড়া গৃহবধূ লাবনী আক্তার ও তার নবজাতকের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। তার ঠাঁই হয়েছে রংপুর সরকারি বালিকা শিশু পরিবারে। স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন তিনি। বুধবার সকালে সমাজসেবা অধিদপ্তর রংপুরের মাধ্যমে তাকে নগরীর বিনোদপুরে অবস্থিত সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় স্থানান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিন। তিনি জানান, কয়েক দিন থেকে গণমাধ্যমে নবজাতক বিক্রির ঘটনায় অসহায় লাবনী আক্তারের খবর প্রকাশিত হলে, বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরকে জানালে তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমলে নেয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে অসহায় নারী ও নবজাতককে আমরা সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টির স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাকে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
রংপুর সরকারি শিশু পরিবার বালিকার তত্ত্বাবধায়ক আলতাব হোসেন সরকার বলেন, আমাদের এখানে সকালে নবজাতককে নিয়ে ওই নারী এসেছেন। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সরকারি সহযোগিতা প্রদান করছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, অসহায় লাবনী আক্তার ও নবজাতকের বিষয়টি জানার পর আমরা দ্রুত সমাজসেবা অধিদপ্তরকে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সেই মোতাবেক জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নবজাতক ও ওই নারীকে সরকারি শিশু পরিবার বালিকায় রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি রংপুর নগরীর ভুরারঘাট এলাকার ওয়াসিম আকরামের স্ত্রী লাবনী প্রসব ব্যথা নিয়ে হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ওই রাতে সিজারের মাধ্যমে একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। তিন দিন পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ লাবনী ও তার স্বামী ওয়াসিমকে বিল পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকলে একপর্যায়ে ওয়াসিম ও লাবনী দম্পতির অসচ্ছলতাকে পুঁজি করে হাসপাতালের পরিচালক এমএস রহমান রনি তার পূর্বপরিচিত জেরিনা আক্তার বিথী ও তার স্বামী রুবেল হোসেন রতনের কাছে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নবজাতককে বিক্রি করে দেন।
এ ঘটনায় লাবনী আক্তার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ রোববার নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।