তুই মদ আনবি, ব্যবসা আমি শিখায়ে দিমু: কাস্টমস কর্মকর্তা
মহিউদ্দিন মিশু, আখাউড়া
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:০৬ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পাসপোর্টধারী যাত্রীদের কাছ থেকে নানা উপায়ে টাকা আদায় করা হয়। টাকা না দিলে করা হয় হয়রানি।
দুই কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পাসপোর্টধারী যাত্রীকে মাদক চোরাচালানের প্রস্তাব দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও আসে যুগান্তরের এ প্রতিবেদকের হাতে।
মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, আখাউড়া কাস্টমস হাউসের শুল্ক গোয়েন্দা ইন্সপেক্টর সজিব পাল ও কাস্টমস ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান ফারুক ব্যাগেজ স্কিনিং কক্ষে বসে এক যাত্রীকে উদ্দেশ্য করে মাদক চোরাচালান নিয়ে কথা বলছেন। সেখানে আসাদুজ্জামান ফারুক মামসাদ আলম লস্কর নামের ওই যাত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, ‘তুই ওয়াইন আনবি, এক ওয়াইনে ব্যবসা করবি ৫ হাজার। কী ওয়াইন আনবি আমি কইয়া দিমু। একটা লাগেজে করে আনবি। আমগো যদি দেস তুইও ব্যবসা করে যাবি। তোরে ব্যবসা শিখায়ে দিমু’।
এ বিষয়ে লস্কর জানান, তার কাছে জামাকাপড় ও চকলেট ছিল। এ সময় তাকে কাস্টমস অফিসার আটকায় এবং টাকা দাবি করে। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার পাসপোর্ট ও মালামাল আটকে তাকে জরিমানা করা হয়। জরিমানার কারণ জানতে চাইলে কাস্টমস অফিসার বলেন, তার কাছে নাকি ফেনসিডিল পাওয়া গেছে। তখন তিনি তার পাশে থাকা একজনকে তার ব্যাগে ফেনসিডিলের বোতল রেখে তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি শুল্ক গোয়েন্দা ইন্সপেক্টর সজিব পাল। আর ক্যামেরার সামনে কাস্টমস ইন্সপেক্টর ফারুক দাম্ভিক আচরণ করেছেন। তিনি বলেন, প্রমাণ থাকলে কিছু করেন। আপনি আমার সম্পর্কে ধারণা রাখলে এমন কথা বলতেন না।
আখাউড়া কাস্টমস হাউসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগের শেষ নেই। পাসপোর্টধারী যাত্রীদের অভিযোগ, নানা অজুহাত কিংবা ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়।
এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না দাবি করে আখাউড়া কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।