রিকশাচালকের মাস্টার্স পাশ স্ত্রীকে চাকরি দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় বগুড়ায় অসহায় ঋণগ্রস্ত রিকশাচালকের মাস্টার্স পাশ স্ত্রী সীমানুর খাতুন শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন। শুধু তাই নয়; ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য একটি ল্যাপটপ, ঘর মেরামতের জন্য দুই বান্ডিল টিন, ছয় হাজার টাকা এবং স্বামী ফেরদৌস মণ্ডলকে ২৫ হাজার টাকার চেক দিয়ে অটোরিকশা ক্রয়ের ঋণমুক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম তাদের এসব প্রদান করেন। এতে ওই দম্পতি প্রধানমন্ত্রীর প্রতির শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
বগুড়া জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গাবতলী উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নের ঠিকাদারপাড়া গ্রামের ফেরদৌস মণ্ডল সংসারে অভাবের কারণে লেখাপড়া করতে পারেননি। প্রাথমিক শ্রেণি পাশ করার পর সংসারের হাল ধরতে রিকশা চালান। পরবর্তীতে বিয়ে করেন ধুনট উপজেলার নাংলু গ্রামের এসএসসি পাশ সীমানুর খাতুনকে।
অর্থাভাবে নিজে লেখাপড়া করতে না পারলেও ফেরদৌস তার স্ত্রীর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রিকশা চালিয়ে পরিবারের ও স্ত্রীর লেখাপড়ার খরচ জোগান। সীমানুর স্বামীর রিকশায় কলেজে যেতেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি সেলাইয়ের কাজ করতেন। ধুনট ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএ পাশ করার পর সরকারি আজিজুল হক কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে মাস্টার্স পাশ করেন। অটোরিকশা কিনতে গিয়ে ফেরদৌস ২৫ হাজার টাকা ঋণ করেন।
ফেরদৌস মণ্ডল ও সীমানুর খাতুনের জীবন সংগ্রাম নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে তা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ওই দম্পতির পাশে দাঁড়ান। সীমানুরকে বগুড়া কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখায় খণ্ডকালীন সহকারী শিক্ষক (সাধারণ) পদে চাকরির ব্যবস্থা করেন।
সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক সীমানুরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এছাড়া তাকে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য একটি ল্যাপটপ, ঘর মেরামতের জন্য দুই বান্ডিল টিন, ছয় হাজার টাকা এবং স্বামী ফেরদৌসের রিকশা কেনার ঋণ শোধে ২৫ হাজার টাকা চেক দেন।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওই দম্পতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং দোয়া করেন। তারা বলেন, ঋণ ও পরিশ্রম করে সংসার টিকে রাখতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় তাদের কষ্টের দিন শেষ হতে চলেছে।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মাদ আল মারুফ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, বগুড়া কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আল মামুন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানের জন্য জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।