বগুড়ার শিশু পরিবার থেকে নিখোঁজ কিশোরীর সন্ধান মেলেনি, গোপন রাখার চেষ্টা
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২১ পিএম
বগুড়া সরকারি শিশু পরিবার থেকে নিখোঁজ কিশোরী মোছা. সুমাইয়ার (১৪) সন্ধান গত তিন মাসেও মেলেনি। এ ব্যাপারে শুধু থানায় জিডি করে দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। নিখোঁজের বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়নি। এতে জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ককে শোকজ করা হচ্ছে।
বগুড়া সরকারি শিশু পরিবারের সূত্র জানায়, গত ২০১৯ সালে রাজশাহীর সেফহোম থেকে অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরী মোছা. সুমাইয়াকে লেখাপড়ার জন্য এখানে পাঠানো হয়। মানসিকভাবে অস্বাভাবিক হওয়ায় তাকে লেখাপড়া করানো সম্ভব হয়নি। সুমাইয়া গত বছরের ৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নিখোঁজ হয়। পরে প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক আবদুল আলিম সদর থানায় জিডি করেন।
নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক শিশু পরিবারের কর্মচারীরা জানান, এতিম কিশোরী সুমাইয়া তিন মাস ধরে নিখোঁজ থাকলেও তাকে উদ্ধারের বিষয়টি সবাই অবহেলা করছেন। এছাড়া ঘটনাটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসককে পর্যন্ত অবহিত করা হয়নি। মনে হচ্ছে, ঘটনাটি গোপন করার চেষ্টা চলছে।
প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক লিপা মোনালিসা জানান, অভিভাবকহীন কিশোরী সুমাইয়া মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে লেখাপড়া করানো সম্ভব হয়নি। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে থানায় জিডি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে অবহিত এবং বিভিন্নভাবে সন্ধান করা হয়েছে। তবে সভাপতি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়নি। তার নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে কোনো ধারণা করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, সুমাইয়াকে উদ্ধারের ব্যাপারে কোনো অবহেলা করা হয়নি। জিডির পর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান শাহিন জানান, জিডি পাওয়ার পর অনেক সন্ধান করেও নিখোঁজ কিশোরীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাকে উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম সোমবার বিকালে জানান, শিশু পরিবার থেকে একটা বাচ্চা নিখোঁজের বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকে (শিক্ষা ও আইসিটি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক শুধু থানায় জিডি করছেন। সভাপতি হিসেবে তাকে কেন অবহিত করা হয়নি এবং বাচ্চাটি উদ্ধারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে তাকে (তত্ত্বাবধায়ক) কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।