বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে শিশির, জনজীবনে স্থবিরতা
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম
সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর কনকনে হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। বৃষ্টির মতো ঝরে পড়ছে শিশির। উত্তরের হিমবায়ুর প্রভাবে হাড় কাঁপানো শীতে কাজ করতে পড়ছেন না স্বল্প আয়ের খেটেখাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
গত আট দিন ধরে জেলায় সূর্যের দেখা মিলছে না। দুপুরের পরে একটু হালকা রোদ উঠলেও তাতে উত্তাপ নেই। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে রয়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ।
এর মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে শীতার্তরা জানান।
এদিকে শেরপুর শহরের ফুটপাতে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যাচ্ছে।
তীব্র শীতে বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অনেক রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসককে না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি শিশু রোগীর অভিভাবকরা।
শীতের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না গবাদি পশুরাও। কনকনে শীতে চলমান বোরো আবাদে ধান লাগাতে পারছেন না কৃষকরা। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকের বীজতলা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, শীতের কারণে বীজতলার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও ক্ষতি রোধে কৃষকদের এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঠাণ্ডার কারণে জমি তৈরি করে বোরো চারা রোপণ কিছুটা ধীরগতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রোববার পর্যন্ত জেলায় বোরো চারা রোপণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে। এবার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯১ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, শেরপুর জেলায় শীত জেঁকে বসেছে। সর্বশেষ শেরপুরে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রিতে নেমেছে। এতে অসচ্ছল মানুষের শীতজনিত কষ্ট বেড়েছে। এই শীতার্তদের শীত নিবারণের জন্য আমরা সরকার থেকে এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৫০ টি কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি; যা ইতোমধ্যেই জেলার পাঁচটি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উপ-বরাদ্দ প্রদান করে বিতরণ করা রয়েছে। এ জেলায় সচ্ছল ব্যক্তিবর্গ যারা আছেন তাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি তারা যেন শীতার্ত মানুষের পাশে থাকার জন্য এগিয়ে আসেন।