সন্দ্বীপে সংখ্যালঘুদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি
সন্দ্বীপ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম
সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও জেলে পল্লীগুলোতে গিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
মুছাপুর, সন্তোষপুর, মগধরা, সারিকাইত ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের অভিযোগ, গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঢুকে মহিলাদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা।
সন্তোষপুর ইউনিয়নের জেলে সাম্প্রদায়ের এক ভোটার যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় সন্ত্রাসী আদনান জাভেদের নেতৃত্বে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী সশস্ত্র অবস্থায় তাদের পল্লীতে ঢুকে মহিলাদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীরা বলেছে, ‘তোমরা নৌকা মার্কার ভোটার এটা আমরা জানি, তোমাদের কষ্ট করে কেন্দ্রে যেতে হবে না। তোমাদের ভোট আমরা দিয়ে দেব, কেন্দ্রে গেলে তোমাদের জাল-নৌকা সবই যাবে’।
সন্ত্রাসীরা যাওয়ার সময় হকিস্টিক, লোহার রড দিয়ে সবার ঘরের টিনে আঘাত করে বেরিয়ে যায়।
মুছাপুর ৩ নম্বার ওয়ার্ডের একজন হিন্দু মহিলা যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে স্থানীয় সেলিম মেম্বারের ছেলে ও শীর্ষ সন্ত্রাসী সোহাগ শিকদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে।
তারা বলেছে, ভোটকেন্দ্রে গেলে এবং নৌকায় ভোট না দিলে সবাইকে সন্দ্বীপ ছাড়তে হবে। এটা এমপি সাহেবের নির্দেশ, তোমাদের জানিয়ে গেলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনি জনসভায় যোগদানের জন্য হিন্দুদের একটি মিছিল বের হলে সোহাগ শিকদারের নেতৃত্বে ওই মিছিলে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এই সোহাগ সিকদার সন্দ্বীপের চাঞ্চল্যকর পুলিশ হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
একইভাবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দিনব্যাপী সন্ত্রাসীরা মগধরা, মাইটভাঙ্গা, সারিকাইত এলাকার হিন্দু ও জেলের সম্প্রদায়ের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। এসব হুমকির কারণে জেলেরা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।
একজন হিন্দু ভোটার জানান, শুনেছি সন্দ্বীপে নৌবাহিনী, বিজিবি র্যাব এসেছে। এত কিছুর পরও সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে তাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন কোনো অ্যাকশন নিচ্ছে না।
মগধরা এলাকার একজন মেম্বার যুগান্তরকে বলেন, দক্ষিণ সন্দ্বীপে হিন্দু, জেলে ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটার সবচেয়ে বেশি। তিনি প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে এসব এলাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ও কোস্টগার্ড সদস্যদের পাহারা বসানোর দাবি জানান। অন্যথা বেশি ভোট কাস্টিংয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনের যে টার্গেট সেটি বাস্তবায়ন হবে না।
তার মতে, সন্দ্বীপের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অধিকাংশই পুলিশ হত্যা প্রচেষ্টা মামলার আসামি। তাদের গ্রেফতার করতে পারলেই জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার সাহস পাবেন।