নৌকা ডোবাতে একাট্টা আ.লীগের একাংশ
বিলাস দাস, পটুয়াখালী ও মামুন তানভীর, দশমিনা
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ভোটকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য করতে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেনের পক্ষে কাজ করছি। তাছাড়া এসএম শাহজাদা সাজু নৌকার প্রতীকে এমপি হয়ে দলের লোকজনকে মূল্যায়ন ও সুসম্পর্ক রাখেনি এবং উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করতে পারেননি। শুধু আমি নয়, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী স্বতন্ত্রের পক্ষে কাজ করছেন।’
দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহামুদ লিটনের এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বর্তমান এমপি এসএম শাহজাদা সাজু বলেন, ‘যেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনীতদের পক্ষে কাজ করতে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন, সেখানে কিছু নেতাকর্মী সাধারণ ভোটারদের কাছে ভুল ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে ঈগলের পক্ষে ভোট চাইছেন, তা ঠিক নয়। শুধু অর্থের লোভে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে এসব লোকজন কাজ করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী কালো টাকা ছড়িয়ে ভোটের মাঠকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন। ২৭ ডিসেম্বর ইসি আহসান হাবিব পটুয়াখালীতে এলে আমি ডিসির সভায় মৌখিকভাবে তার কাছে এসব অভিযোগ করেছি।’ শাহজাদা আরও বলেন, ‘মূলত দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে কিছু নেতাকর্মী ক্ষোভে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমি ভালো কাজ না করলে দল দ্বিতীয়বারের মতো আমাকে মনোনীত করত না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পটুয়াখালী-৩ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। বেশ কয়েকবার নৌকার টিকিট নিয়ে অরাজনৈতিক ব্যক্তিরা এ আসনটিতে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান এমপি এসএম শাহজাদা সাজুর বেলায়ও তাই ঘটেছে। যে কারণে বিগত দিনগুলোতে এ আসনটিতে নৌকার বিরুদ্ধে লড়তে অনেক রাজনৈনিক দল হিমশিম খেত। অথচ এবারের নির্বাচনে নৌকাকে ডোবাতে মাঠে একাট্টা হয়েছেন আওয়ামী লীগের একাংশের লোকজন। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার বরাতে ঈগল প্রতীকে ভোট দাবি করছেন তারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের এ দ্বৈত রাজনীতিতে সাধারণ ভোটারকে প্রভাবিত করছে। এসব কোন্দলের সমাধান না হলে ভোটের রাজনীতিতে তৃতীয় পক্ষের অবস্থান শীর্ষে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন লীগের প্রবীণ ও ত্যাগীরা। একইভাবে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ ঈগল প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
সূত্র বলছে, দলের মধ্য অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সুবিধাবঞ্চিত লোকজন শাহজাদাকে ঠেকাতে একাট্টা হয়েছেন, যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে হানাহানি-সংঘাত ও পালটাপালটি অভিযোগ। গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সরদার মু. শাহ আলম বলেন, ঈগল যদি শেখ হাসিনার প্রতীক হয়, তবে বরিশালের জনসভায় তিনি নৌকার পক্ষে ভোট চাইলেন কেন? একটি সুবিদাবাদী গ্র“প সব সময় উলটো স্রোতে গা ভাসিয়ে দলে বিভাজন সৃষ্টি করছেন। অবৈধ অর্থে লোকের সমাগম ঘটে, ভোটের নয়। এ উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক সন্তোষ কুমার দে বলেন, শাহজাদা প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাই আমরা ঈগল নিয়ে মাঠে নেমেছি। এসব ঘটনায় এ আসনে স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আবুল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মতামত পাওয়া যায়নি।