সন্দ্বীপে ভোটারবিহীন নির্বাচনের টার্গেট ছিল সমীর বাহিনীর
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
পুলিশ হত্যা করে সর্বত্র আতঙ্ক তৈরির মাধ্যমে সন্দ্বীপে ভোটারবিহীন নির্বাচন করার টার্গেট ছিল সমীর বাহিনীর। তার গডফাদারের নির্দেশে এ পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে সন্দ্বীপে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আনার দায়িত্বও ছিল সমীরের হাতে। পুলিশের দুইজন শীর্ষ কর্মকর্তাও এ বাহিনীর টার্গেটে ছিল। গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী রবিউল আলম সমীরকে আটক করছে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ওই রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় মগধরা ৭নং ওয়ার্ডের তীরার গৌ নতুন বাড়িতে সমীরের শ্বশুরের ঘর থেকে তাকে আটক করে। এ সময় সমীরের কাছ থেকে একটি ওয়ান শুট, সাটার গাউন্ড ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সমীর জানান, মুসাপুরের দীঘি, বাউরিয়ার দীঘি, কালাপানিয়ার দীঘি এবং সাগরের মাঝখানে স্পিডবোটে বসে তাদের প্রতিনিয়ত বৈঠক হতো এবং সেখানে নির্বাচনি পরিকল্পনা নেওয়া হতো। এসব বৈঠকে সন্দ্বীপের ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ১২-১৩ জন মেম্বার ও কথিত ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী ৬০-৭০ জন সন্ত্রাসী এবং কয়েকটি স্কুল-কলেজের ১০-১২ জন শিক্ষক কর্মচারী (প্রিসাইডিং ও পুলিং অফিসার) পালাক্রমে অংশ নিতেন। তাদের মূল টার্গেট ছিল মুছাপুর, মগধরা, হারামিয়া, বাউরিয়া, সন্তোষপুর, কালাপানিয়া ও উরিরচরের কেন্দ্রগুলো দখল করা। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল বলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন সমীর। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের অনেকের নামও স্বীকার করেছেন সমীর। তদন্তের স্বার্থে ও আসামিদের গ্রেফতারের জন্য নামগুলো গোপন রাখা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
সমীর তার স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তাকে নানা ধরনের টোপ ও লোভ দেখানোর পরেও তারা তাদের পক্ষে কাজ করতে রাজি হননি। নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার প্রথম থেকে পুলিশ প্রশাসন সন্দ্বীপে সন্ত্রাসীদের (তার বাহিনীর লোকজন) গ্রেফতার, হয়রানি ও মামলা দায়ের করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে। কালাপানিয়া, বাউরিয়া ও সন্দ্বীপ পৌরসভাতেও তাদের হামলার টার্গেট ছিল।
গ্রেফতারের পর চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক হাবিবুর রহমান ও মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী জানান, সমীর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও নারী নির্যাতনসহ একাধিক মামলা চলমান। দীর্ঘদিন ধরে আমরা অপারেশনে ছিলাম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাতে আমরা তাকে গ্রেফতার করি।