ফেঁসে যাচ্ছেন সন্দ্বীপ উপজেলা চেয়ারম্যান-মেয়রসহ ১১ ইউপি সদস্য
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৪ এএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপ আসনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ফেঁসে যাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান-পৌর মেয়রসহ ১১ জন। একইভাবে অভিযুক্ত হচ্ছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ২০ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী।
রোববার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশে বলা হয়েছে, স্থানীয় সরকারের কতিপয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সপদে আসীন থেকে ও সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। সরকারি ওয়েব পেজে বিভিন্ন মার্কার পোস্ট দিচ্ছেন। নিজের ফেসবুক ও অফিসের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করে ভোট চাচ্ছেন; যা সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এর পরিপন্থি।
ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে- স্থানীয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্বাচনি আসনে অনেকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জনপ্রতিনিধিরা যাতে এ ধরনের বেআইনি প্রচার-প্রচারণা থেকে বিরত থাকে সেজন্য সব উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাধারণ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, আচরণবিধি লঙ্ঘনের সঙ্গে চট্টগ্রাম-৩ আসনের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ ১১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততার খবর পাওয়া গেছে। অভিযোগ আছে এ আসনের উপজেলা চেয়ারম্যান মাঈন উদ্দিন মিশন, ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, পৌর মেয়র মোক্তাদির মাওলাসহ ১১ ইউপি চেয়ারম্যান তাদের সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে গিয়ে নৌকা মার্কার প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। এসব প্রচারণায় উপজেলা চেয়ারম্যান তার সরকারি গাড়ি ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করছেন। এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে দেওয়ার কথা বলে সংশ্লিষ্টরা ওই প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। অফিস চলাকালীন বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত থেকে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে ভোট চাচ্ছেন।
সবচেয়ে বেশি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে হারামিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রার্থীর সাবেক এপিএস জসিম উদ্দিন, মগধরা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, নৌকা প্রার্থীর ভাই ও বাউরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, কালাপানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলীমুর রাজি টিটু, সন্তোষপুরের ইউপি চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ, মুছাপুরের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের নাদিম, সারিকাইতের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ পনির, আজিমপুরের চেয়ারম্যান রকির বিরুদ্ধে। কাউন্সিলরদের মধ্যে পৌরসভার শাকিল উদ্দিন খোকন ও পারভেজ অন্যতম।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন নির্বাচনি কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন মাইটভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
সন্দ্বীপ উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, মেয়রসহ সব চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।