সংখ্যা নিয়ে ক্ষোভ মেহেরপুরে হিজড়াদের নারী হিসাবে লিপিবদ্ধ
মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:১৪ পিএম
ফাইল ছবি
হালনাগাদ ভোটার তালিকায় মেহেরপুরের হিজড়াদের নারীতে রূপান্তর করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। মেহেরপুরে দুটি আসনে প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় হিজড়াদের পরিসংখ্যানে মাত্র দুজন দেখানো হয়েছে। এ পরিসংখ্যান নিয়ে জেলার হিজড়াদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জেলা নির্বাচন অফিস দুজন হিজড়া দেখালেও জেলা পরিসংখ্যান অফিস বলছে হিজড়ার সংখ্যা ২৬। হিজড়াদের স্থানীয় প্রতিনিধি সিমা খাতুন বলেছেন, মেহেরপুরে তাদের সংখ্যা ২৯ জন। অপরদিকে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপকারভোগীর তালিকায় ৩০ জনের নাম রয়েছে।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাজী কাদের মো. ফজলে রাব্বি বলেন, আমাদের কাছে যেসব হিজড়া প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সরকারি সুবিধা নিয়েছেন জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সবার পরিচয় হিজড়া। নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় প্রকাশিত পরিসংখ্যান সঠিক নয়। মেহেরপুরের জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপপরিচালক মো. বছির উদ্দীন বলেন, আমাদের সর্বশেষ শুমারি অনুযায়ী জেলায় মোট হিজড়ার সংখ্যা ২৬ জন। হিজড়াদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হিজড়া ‘লিঙ্গ পরিচয়’কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। ২০১৪ সালের ভোটার নিবন্ধন বিধিমালা প্রণয়নের সময়ই নির্বাচন কমিশন ‘হিজড়ার অপশন’ প্রস্তাবিত নিবন্ধন ফরমে যুক্ত করে। কিন্তু ভোটার তালিকা আইন ও ভোটার তালিকা বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায় ইতোঃপূর্বে তা কার্যকর সম্ভব হয়নি। ২০১৮ সালে বিধিমালা সংশোধনের পর এবারই প্রথম তাদের তথ্য সংগ্রহ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরমেও লিঙ্গ হিসাবে নারী ও পুরুষের পাশাপাশি হিজড়া রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় নেই। এজন্য হিজড়ারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী পুরুষ বা নারী যে কোনো একটি অপশন পছন্দ করে ভোটার হতে পারবেন। ভোটার তালিকার পরবর্তী হালনাগাদে হিজড়া ভোটার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে তালিকাভুক্ত হবে। হিজড়াদের প্রতিনিধি সুমি খাতুন বলেন, জেলায় আমাদের মোট সংখ্যা ২৯ জন। দীর্ঘ বছর ধরে এ মেহেরপুরেই তাদের বসবাস।
এর মধ্যে মেহেরপুর সদরে ১৯ জন ও গাংনীতে ১০ জন। আমরা সবাই অনেক আগে থেকেই নারী ভোটার হিসাবে তালিকাভুক্ত। নতুন করে ভোটার হিসাবে আমাদের হিজড়াদের হালনাগাদ করা হয়নি। গত পৌর নির্বাচনে হিজড়া হিসাবেই সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার হিসাবে নির্বাচন করেছি।’ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়লীউল্লাহ বলেন, ‘মেহেরপুরে হিজড়ারা ভোটার তালিকায় নারী ভোটার হিসাবে আগে থেকেই তালিকাভুক্ত ছিলেন। নতুন যারা ভোটার হবেন আমরা তাদের হিজড়া ভোটার দেখাব। অন্যরা আগের তালিকায়ই থাকবেন। এ বছর গাংনীতে নতুন দুজন ভোটার হয়েছেন। শুধু ওই দুজনকে হিজড়া ভোটার হিসাবে দেখিয়েছি। অন্যদের আমরা আগের তালিকা থেকে নারী হেসাবে লিপিবদ্ধ করেছি।