বিএনপি-জামায়াতের ঠ্যাং ভাঙতে বলায় এমপি বাহাউদ্দীনকে শোকজ
কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:১৮ এএম
আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া গেলে তাদের হাত-ঠ্যাং ভেঙে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রার্থী ও কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর-সিটি করপোরেশন) আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। এমন বিতর্কিত মন্তব্যে তাকে মঙ্গলবার শোকজ করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি।
শোকজ নোটিশের সূত্রে জানা যায়, প্রতীক বরাদ্দের পর গত সোমবার বিকালে এমপি বাহার মহানগরের ৩নং ওয়ার্ডের কালিয়াজুরী পিটিআই স্কুল মাঠে উঠানবৈঠক করেন। ওই স্থানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বক্তব্যে এমপি বাহার বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট। বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাবে বলে নির্বাচনে আসেনি। আর কোনো কারণ আছে? তবে কোনো বিএনপি-জামায়াতের কর্মীকে যদি কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া যায় তার হাত-ঠ্যাং (পা) ভেঙে দেবেন আপনারা। আমি আ ক ম বাহাউদ্দিন আপনাদের সঙ্গে আছি। কোনো ভয়ের কারণ নেই। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে যাবেন কুমিল্লার মানুষ।
এদিকে এমপি বাহারের ওই বিতর্কিত মন্তব্যে তাকে শোকজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার আসনটির নির্বাচনি তদন্ত কমিটি ও যুগ্ম জেলা জজ মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন ইকবাল তাকে শোকজ প্রদান করেন।
ওই শোকজে উল্লেখ করা হয়, ‘আপনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে ১৮ ডিসেম্বর মহানগরের ৩নং ওয়ার্ডের কালিয়াজুরী পিটিআই স্কুল মাঠে উঠানবৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে আপনি ‘যদি কোনো বিএনপি ও জামায়াতের কোনো কর্মীকে কোনো প্রার্থীর পক্ষে পাওয়া যায় তার হাত, ঠ্যাং ভেঙে দেবেন। আমি আ ক ম বাহাউদ্দিন আপনাদের সঙ্গে আছি’ মর্মে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন। আপনার ওই বক্তব্যের কারণে নির্বাচনের সুষ্ঠু, অবাধ ও ভীতিমুক্ত পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এতে আপনি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। এ অবস্থায় ওই বিষয়ে আপনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন নির্বাচন কমিশনে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে না। আগামী ২৪ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে স্বয়ং অথবা উপযুক্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে হাজির হয়ে কারণ দর্শাবেন।
ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ নুরুর রহমান বলেন, ‘ভিডিওটির খণ্ডিত অংশ প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। কারণ এমপি বাহার বলেছিলেন— বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইবে, কোনো প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইবে। তাই কোনো প্রার্থীর পক্ষ নিতে আসা এমন বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের প্রতিহত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে বিধিমোতাবেক পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি ওই প্রার্থীকে শোকজ প্রদান করেছে।
এ আসনে এমপি বাহারের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত আসনের এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমা। এ ছাড়া জাপা, বিএসপি ও জাকের পার্টির আরও ৩ প্রার্থী রয়েছেন।