চট্টগ্রামে পেঁয়াজের দাম খুচরায় এখনো বাড়তি
আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০৫ পিএম
দেশের ভোগ্যপণ্যের বড় বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনো বাড়তি। কেজিপ্রতি ৮০ টাকার কমে আমদানি করা ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। নিুমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। গত সপ্তাহের শুরুতে এক লাফে যে হারে দাম বেড়েছিল, সে অনুপাতে দাম কমেনি। এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজে ব্যবসায়ীরা মুনাফা করছে ৬০ টাকার বেশি। উপজেলাগুলোতে পেঁয়াজের দাম এখনো আকাশচুম্বী। একইভাবে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় নতুন করে কমেছে সব ধরনের সবজির দাম।
সরকার কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন খরচ বাড়ায় কৃষকপর্যায়েই দাম বেশি। তার প্রভাব পড়েছে বাজারে। ক্রেতারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দাম কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। নির্ধারিত দাম বাজারে কার্যকর হয়েছে কিনা, তা যাচাই করার যেন কেউ নেই। অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে সাধারণ মানুষ অসহায়।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, দুই কারণে পেঁয়াজের দাম কমেছে। একদিকে বেড়েছে পেঁয়াজের সরবরাহ। অন্যদিকে ক্রেতারা পেঁয়াজ কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে আড়তদাররা বেকায়দায়। ফলে পেঁয়াজের দাম নিুমুখী। দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম একদিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। অন্যদিকে কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার। পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজারের পেঁয়াজের দামের পার্থক্য বেশি। ফলে পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরা বাজারে ভোক্তারা সুফল পাচ্ছেন না। প্রশাসনকে তাই পাইকারি বাজারের পাশাপাশি খুচরা বাজারেও অভিযান চালাতে হবে।
শুক্রবার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গুদাম পেঁয়াজে ভর্তি। তবে ক্রেতা আগের মতো নেই। অনেকে গুদাম থেকে পেঁয়াজের বস্তা ফুটপাতেও থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন। পেঁয়াজ বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। শুক্রবার পাইকারি বাজারে চীনা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং দেশীয় মুড়ি কাটা পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। আর খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকার বেশি দামে। এদিকে ডিম ও আলুর দাম বেড়েছে। প্রতি ডজন ডিম গত সপ্তাহে ১২০ টাকা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকার বেশি দামে। গত সপ্তাহে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকায়।
৮ ডিসেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। প্রথম পর্যায়ে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ১০৫ টাকা থেকে ১১৫ টাকা হয়। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে দাম বেড়ে হয় কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শনিবার বিকালে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকায় গিয়ে পৌঁছে। তিন সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজের দাম খুচরায় কেজিপ্রতি ৮০ টাকার নিচে বিক্রি হয়েছে।
নিউ শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজের মালিক শোহরাব হোসেন জানান, পেঁয়াজের দাম নিয়ে কয়েক দিনের অস্থিরতা এখন আর নেই। পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। এরকম থাকলে ২-৩ দিনের মধ্যে দাম আরও কমে আসবে। কারণ পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। বস্তায় ৩-৪ দিনের বেশি রাখা যায় না। যে কারণে ব্যবসায়ীদের বাধ্য হয়ে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।