বড়াইগ্রামে শিক্ষা কর্মকর্তাকে পেটালেন সৈনিক লীগ সভাপতি
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম
নাটোরের বড়াইগ্রামে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ঢুকে এক কর্মকর্তাকে পিটিয়েছেন স্থানীয় উপজেলা সৈনিক লীগের সভাপতি রুবেল বালি ও সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া জহির উদ্দিন মিয়াজীসহ বেশ কয়েকজন তরুণ।
বৃহস্পতিবারের এ হামলায় অভিযুক্ত করা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রউফকে কিল-ঘুসি ও চড়-থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিতের পাশাপাশি অফিসের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করেছে।
জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় সংসদ-সদস্য ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর অনুসারী বলে পরিচিত রুবেল বালি ও জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন তরুণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে দরজা বন্ধ করে আব্দুর রউফকে লাঞ্ছিত করেন।
আব্দুর রউফ বলেন, আমি অফিসে বসে কাজ করছিলাম। এ সময় ১৪-১৫ জন তরুণ হঠাৎ আমার রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমি তাদের আসার কারণ জানতে চাইলে রুবেল বালি এসে আমার ডান হাত ধরে বলতে থাকেন, এই হাতটা কেটে নেয়ার হুকুম আছে। অন্যজন বলে, মেশিন বের কর, একে শেষ করে দে-বলে আমাকে চেয়ার থেকে তুলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং অফিসের টেবিল-চেয়ার ও ফাইলপত্র তছনছ করে। এ সময় আরও ১৫-২০ জন বাইরে দাঁড়িয়ে দরজা আটকে ছিল। তাই অন্য কেউ রুমে ঢুকতে পারছিলেন না।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুজ্জামান বলেন, আমি নিচতলায় বসি। স্যারকে (মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার) রুমে আটকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে দ্রুত গিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করি। এ সময় একজন বের হয়ে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে জানাই।
খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) বোরহান উদ্দিন মিঠু ও বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সিরাজুল ইসলামসহ অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আতাউর রহমান ও বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন ইউএনও দপ্তরে যান। তারা ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
ইউএনও আবু রাসেল বলেন, সিসি টিভি ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আতাউর রহমান আতা বলেন, এই প্রথম উপজেলা পরিষদ ভবনে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটল। এটি খুবই অন্যায় করা হয়েছে।
সংসদ-সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে তার দায়ভার আমি নেব না। অপরাধী যেই হোক পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার ইসলামপুর গুনাইহাটি ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা চলছে। বুধবার অভিযুক্তরা ওই মাদ্রাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ মাওলানা ওসমান গণিকেও তার দপ্তরে লাঞ্ছিত করে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।