Logo
Logo
×

সারাদেশ

পটিয়ায় হেফাজত আমিরের আগমনের খবরে দিনভর উত্তেজনা

Icon

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৩ পিএম

পটিয়ায় হেফাজত আমিরের আগমনের খবরে দিনভর উত্তেজনা

উত্তেজনার মধ্যে মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী পটিয়া মাদ্রাসার বদলে পটিয়ার শান্তিরহাটের জিরি মাদ্রাসায় অবস্থান নেন। সেখান থেকেই ফিরে যেতে হয় তাকে।

চট্টগ্রামের পটিয়া আল জামেয়া মাদ্রাসায় হেফাজত আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর আগমনের খবরে দিনভর উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। তবে শেষপর্যন্ত তিনি সেখানে যেতে পারেননি। 

জানা যায়, পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজাকে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ায় ঘটনায় সৃষ্ট সমস্যার মধ্যে হেফাজত নেতা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী রোববার ওই মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা ছিল। 

এ খবরে ভোর থেকে মাদ্রাসার ভেতরে হামজার বিপক্ষে আর বাইরে হামজার পক্ষের লোকজন অবস্থান নেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভোর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। তারা ভোর থেকে মাদ্রাসার মূল ফটকসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেন এবং মাদ্রাসায় প্রবেশ ও কেউ যাতে বাহিরে না যেতে পারে সে নির্দেশনা জারি করেছেন। 

দিনভর উত্তেজনার মধ্যে হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী পটিয়া মাদ্রাসার বদলে পটিয়ার শান্তিরহাটের জিরি মাদ্রাসায় অবস্থান নেন। সেখান থেকেই ফিরে যেতে হয় তাকে। 

এ ঘটনায় রাতেও মাদ্রাসার আশপাশে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। 

জানা গেছে, পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজার কাছ থেকে জোরপূর্বক আদায় করা পদত্যাগপত্রকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ১১ ডিসেম্বর সর্বশেষ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে পরদিন থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার মাদ্রাসার মূল শূরা কমিটির ১৭ সদস্যকে নিয়ে বৈঠক আহ্বান করার কথা ছিল; কিন্তু হঠাৎ করে মাদ্রাসার মূল শূরা কমিটি বাদ ও বর্তমান ৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ তাদের মনোনীতদের দিয়ে নতুন শূরা কমিটির বৈঠক আহবান করায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। 

মহাপরিচালক মাওলানা হামজাপন্থি সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, পটিয়া মাদ্রাসায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটি দুপক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করা দরকার; কিন্তু মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজাকে সরিয়ে যারা মাদ্রাসার দখল করে রেখেছেন তারা কোনো সমাধানের কথা শুনতেই রাজি নন। এজন্য যা করার তারা সেটিই করছে। সবশেষ এতবছর যে শূরা কমিটির মাধ্যমে মাদ্রাসা পরিচালিত হয়ে আসছে তারা কোনো বৈঠক ছাড়া নিজেরা সেটি বাতিলের দাবি করে হেফাজত আমিরকে ব্যবহার করে নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন। অথচ এসব কাজ ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় কোনো আইনেই সমর্থনযোগ্য নয়। একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্বের জন্য তারা যা করছেন এটি আলেমদের জন্য লজ্জার বিষয়। 

সরেজমিন দেখা যায়, ভোর থেকে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমানের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পটিয়া থানা ও রিজার্ভ পুলিশ মাদ্রাসার ফটক সমূহ এবং আশপাশে অবস্থান নেন। 

পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, আপাতত মাদ্রাসায় বাইরে থেকে ভেতরে কেউ প্রবেশ বা বাহিরে বের হওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে জটিল না হয়ে শান্ত থাকে- সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।

পটিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দীন জানান, মহাপরিচালক ওবায়দুল্লা হামজাকে বের করে দেওয়ার পর মাদ্রাসা পরিচালনায় ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির সদস্য শায়খুল হাদীস আহমদুল হক গত ৫ ডিসেম্বর প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে ১১ ডিসেম্বেরের মধ্যে মহাপরিচালকের বিষয়টি আপস করা হবে। এর মধ্যে আপসে ব্যর্থ হলে পরদিন থেকে মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখ হবে। সেই মতে আজ শূরা কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে; কিন্তু ওই সভাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। 

হেফাজত আমির পটিয়া মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত তিনি জিরি মাদ্রাসায় অবস্থান নেন। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম