পটিয়া মাদ্রাসায় দুইপক্ষের অবস্থান ঘিরে উত্তেজনা, ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন
পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:০০ পিএম
চট্টগ্রামের পটিয়া আল জামেয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজার কাছ থেকে জোরপূর্বক আদায় করা পদত্যাগপত্রকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ১১ ডিসেম্বর সর্বশেষ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে পরদিন থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার মাদ্রাসার মূল শূরা কমিটির ১৭ সদস্যকে নিয়ে বৈঠক আহ্বান করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে মাদ্রাসার মূল শূরা কমিটি বাদ ও বর্তমান ৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ তাদের মনোনীতদের দিয়ে নতুন শূরা কমিটির বৈঠক আহবান করায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার ভোর থেকে মাদ্রাসার ভেতরে হামজার বিপক্ষে আর বাইরে হামজার পক্ষের লোকজন অবস্থান নিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভোর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। তারা ভোর থেকে মাদ্রাসার মূল ফটকসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়ে মাাদ্রাসায় প্রবেশ ও কেউ যাতে বাহির হতে না পারে সে নির্দেশনা জারি করেছেন।
জানা গেছে, পটিয়া মাদ্রাসার মূল শূরা কমিটির সদস্যদের বাদ দিয়ে হেফাজত নেত মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীকে নিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করে ওবায়দুল্লাহ হামজার বিরোধীরা। রোববার মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সেখানে যাওয়ার কথা একটি গুঞ্জন শোনা যায়। পটিয়া মাদ্রাসায় তার যাওয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, রোববার ভোর থেকে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমানের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পটিয়া থানা ও রিজার্ভ পুলিশ মাদ্রাসার ফটক সমূহ এবং আশপাশে অবস্থান নিয়েছেন। মাদ্রাসার ভেতরে রণসাজে অবস্থান নিয়েছেন হামজা বিরোধীরা। আর মাদ্রাসার বাইরে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন হামজাপন্থিরা।
হেফাজত নেতা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী মাদ্রাসায় প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় উত্তেজনা বিরাজ করছে পটিয়ায়।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, আপাতত মাদ্রাসায় বাইরে থেকে ভেতরে কেউ প্রবেশ বা বাহিরে বের হওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে জটিল না হয়ে শান্ত থাকে সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।
পটিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দীন জানান, মহাপরিচালক ওবায়দুল্লা হামজাকে বের করে দেওয়ার পর মাদ্রাসা পরিচালনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির সদস্য শায়খুল হাদীস আহমদুল হক গত ৫ ডিসেম্বর প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে ১১ ডিসেম্বেরের মধ্যে মহাপরিচালকের বিষয়টি আপস করা হবে। এর মধ্যে আপসে ব্যর্থ হলে পরদিন থেকে মাদ্রাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখ হবে। সে মতে আজ শূরা কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে। কিন্তু ওই সভাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ()