সালিশ শেষে সংঘর্ষ, ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল মায়ের
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৪ পিএম
গজারিয়ার ভবেরচর ইউনিয়নের পৈক্ষারপাড়ে গ্রাম্য সালিশ শেষে সংঘর্ষের সময় এক নারী নিহত হয়েছেন। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম রোকেয়া বেগম (৬২)। তিনি পৈক্ষারপাড় গ্রামের মৃত এবায়দুল্লাহ সরকারের স্ত্রী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে পৈক্ষারপাড় গ্রামের এবায়দুল্লাহ সকারের ছেলের সঙ্গে চাচতো ভাই মৃত শহিদুল্লাহ সরকারের ছেলেদের বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ হলেও তা সমাধান করা সম্ভব হয়নি। পরে তা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে সমাধান করার কথা ছিল।
তবে উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে বাড়িতেই সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
শনিবার দুপুর দুইটা থেকে সালিশ শুরু হয়। সালিশের রায়ে বিরোধপূর্ণ জায়গাটি এবায়দুল্লাহর ছেলেরা পান। তবে জায়গাটি মেপে খড়ের গাদা সরিয়ে তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার সময় কথা কাটাকাটির জেরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় ছেলেদের বাঁচাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে মারা যান এবায়দুল্লাহর স্ত্রী রোকেয়া বেগম।
সালিশের বিচারক হান্নান সরকার বলেন, সালিশে আমিসহ সাবেক ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন, নান্নু মিয়া, মোশারফ হোসেন মিন্টুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি আমরা সমাধান করে দিয়েছিলাম। সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে সালিশ শেষ হওয়ার পর। তখন আমরা কেউ উপস্থিত ছিলাম না।
নিহতের ছেলে সোহেল সরকার বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাই সজীব, মঞ্জু ও রাজিব আমাকে মারধর করে। আমার মা আমাকে বাঁচাতে আসলে তাকে কিল-ঘুসি ও লাঠিপেটা করে তারা। আমার মাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সবার ফাঁসি চাই।’
বিষয়টি সম্পর্কে ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহিদ মোহাম্মদ লিটন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার হওয়ার কথা ছিল, তবে উভয়পক্ষ তাদের বাড়িতে সালিশ করার ব্যাপারে দাবি জানালে আমি সেখানে সম্মতি দিই। শনিবার বিকাল চারটার পরে খবর পেলাম সালিশের পর জায়গা মেপে ভাগাভাগি করার সময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় এক নারী মারা গেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিকালে হাসপাতালে এক নারীকে আনা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আমরা তাকে মৃত ঘোষণা করি।
সদর-গজারিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল হাসান বলেন, সালিশের পর সংঘর্ষের ঘটনায় এক নারী মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি। ঘটনার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।