বেতাগীতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অভিযোগের তদন্ত করেন নিজেই
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪৫ পিএম
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্করের দুর্নীতি ঢাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সিভিল সার্জন ও পরিচালকের কার্যালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না তদন্ত কমিটি। এ ছাড়াও দুর্নীতির তদন্ত চলাকালীন বদলির আবেদন করেছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। যদিও সেটি পরে গোপন করে রেখেছেন সিভিল সার্জন অফিসে এমনটাই জানিয়েছেন বেতাগী হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র। এদিকে ঘুস গ্রহণের ভিডিও ভাইরালের পর নিজ গৃহকর্মীকে মারধরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্তের কাজও করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজেই। তবে এ ঘটনায় কোনো ধরনের মন্তব্য করতে নারাজ তদন্ত কমিটি।
অভিযোগ উঠেছে, ফাহমিদা লস্কর ঘুস বাণিজ্যসহ বেতাগীতে নিজের সুরক্ষাসহ দুর্নীতির পক্ষে সাফাই দিতে গঠন করেছেন ক্যাডার বাহিনী। ওই ক্যাডার দিয়েই তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীকে জোর করে ধরে সব অভিযোগ মিথ্যা, এই মর্মে স্বীকারক্তিমূলক ভিডিওবার্তা মোবইলে ধারণ করেন ফাহমিদা লস্কর। এ সংক্রান্ত ওই অফিস কক্ষের মধ্যের আরেকটি ভিডিও এসেছে যুগান্তরের কাছে। এ ছাড়াও তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই অভিযোগের মূল কপি দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লস্করকে, এমনটাই জানান মারধরের শিকার অভিযোগকারী আসমা বেগম। তবে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেতাগী (ইউএনও) বলছেন কেবলমাত্র অভিযোগের একটি ফটোকপি লস্করকে দিয়েছেন তিনি।
মারধরের শিকার গৃহকর্মী আসমা বেগম বলেন, আমাকে মারধরের পর ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে আমাকে চাকরি থেকে বের করে দেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। হাসপাতালের মধ্যে আরও ছয়জন ডাক্তারের রান্নার কাজ করতাম তাদের বলেও আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং হাসপাতালে ঢুকতেই নিষেধ করেছেন। অভিযোগ দেওয়ার দুদিন পর স্থানীয় শাহিন ও মামুন নামের দুই লোক এসে আমাকে টেনে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যান। তখন তিনি অভিযোগের মূলকপি দেখিয়ে বলেন, তুই অভিযোগ দিয়ে আসছ আর ইউএনও সেটির মূল কপিই আমাকে দিয়ে দিয়েছে। অযথা ঝামেলায় জড়াস না, তারা (ক্যাডার-শাহিন ও মামুন) যা বলে তাই শোন ভালো হবে। এরপর আমাকে যা বলতে বলে তাই বলি, এবং তারা মোবাইলে তা ভিডিও করেন।
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ফাহমিদা লস্করের সঙ্গে কথা বলতে বারবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। পরে কথা হয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মারধরের ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেতাগী (ইউএনও) ফারুক আহমেদের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘গৃহকর্মীকে মারধরের ঘটনার তদন্ত আমি নিজেই করব। অভিযোগকারীকে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তার অফিস কক্ষে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন কিনা! জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।