Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঈদগাঁওয়ে বরই চুরি ঠেকানোর তারে বন্যহাতির মৃত্যু

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৪ পিএম

ঈদগাঁওয়ে বরই চুরি ঠেকানোর তারে বন্যহাতির মৃত্যু

কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে বাউকুল (বরই) বাগানে বন্যপ্রাণীর উৎপাত ও চুরি ঠেকাতে বসানো চোরাই বৈদ্যুতিক তারে আটকে এক বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার ভোরে উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের শিয়াপাড়ার ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জের ঝিরিপথ একাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে হাতির দেহটি ওখানেই পুঁতে ফেলা হয়েছে।

এদিকে, ময়নাতদন্তকারী প্রাণিসম্পদ চিকিৎসকের বরাতে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) আনোয়ার হোসেন সরকার জানান, আনুমানিক ৪০-৪২ বছর বয়সি হাতিটি হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছে। তবে মৃত্যুর মূল কারণ জানতে ভিসেরা রিপোর্ট করতে হাতিটির দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গগুলো ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

স্থানীয় অনেকে জানান, এ ঝিরিপথ এলাকার বনভূমি সামাজিক বনায়নের আওতায় বরাদ্দ পেয়েছেন এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদের ভাই ফিরোজ আহমেদ। তিনি বনায়নের জায়গাটি বর্গা হিসাবে রোহিঙ্গা আবদুল জলিলকে দিয়েছেন। সেখানে কয়েক বছর ধরে জলিল বাউকুল চাষ করছেন। চলতি বছর বিভিন্ন পশুপাখি, বন্যপ্রাণী ও মানুষের চুরির হাত থেকে বাউকুল বাঁচাতে বাগানের চারপাশে জিআই তার দিয়ে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। চেয়ারম্যানের খামারের পাশের খেত থেকে ধান খেয়ে ওই ঝিরিপথ দিয়ে বনে ফিরে যাওয়ার পথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পড়ে যায় বন্যহাতিটি। ফজরের আজানের আগে থেকে ঘণ্টা দুয়েক হাতিটি বাঁচার আকুতিতে চিৎকার করছিল। চিৎকার শুনলেও কেউ ভয়ে বের হননি। তবে সেই তারের সংযোগটি খুলে ফেললে হয়তো হাতিটি বেঁচে যেত। সকালে বনবিভাগের লোকজন জলিলের বাড়ি থেকে জিআই তারসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম জব্দ করে নিয়ে গেছে।

এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থল ও আশপাশের বেশকিছু জায়গা উপকার ভোগীদের সামাজিক বাগান। কিছু মহল বনজগাছ সাবাড় করে বাগানসহ বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছে। রোহিঙ্গাদের ঘিঞ্জি বসবাস রয়েছে এ পাহাড়ি এলাকায়।

উত্তর বনবিভাগের ভোমরিয়াঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। পরে ডিএফওসহ বনবিভাগের কর্মকর্তারা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেনারি চিকিৎসকসহ একটি টিম হাতিটির ময়নাতদন্ত করেছে। ঘটনার পর হতে জলিল পলাতক। সামাজিক বনায়নের গাছ কাটা ও বৈদ্যুতিক তারের বিষয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেনারি চিকিৎসক জুলকার নাঈন বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে হাতিটি হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট বা অন্য কারণেও হার্টঅ্যাটাক হতে পারে। তবে সরাসরি বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে কিনা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। পলাতক থাকায় আবদুল জলিলের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম