কেশবপুর শহরের সাহাপাড়া এলাকায় এক মা তার ১৪ দিনের যমজ ছেলেমেয়েকে হত্যা করেছেন। মঙ্গলবার রাতে স্বামীর পরকীয়া ও পারিবারিক কলহে সুলতানা নামে ওই মা তার দুই শিশুকে বাড়ির পাশে ডোবার পানিতে ফেলে হত্যা করেন।
বুধবার সকালে ডোবা থেকে পুলিশ যমজ শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। নিহতদের বাবা আবু বক্কর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ঘাতক মা সুলতানাকে আটক করেছে।
পুলিশ জানায়, সাহাপাড়া নতুন মসজিদ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিফের মেয়ে সুলতানা (৩৫) গত ১০ নভেম্বর সিজারের মাধ্যমে যমজ সন্তানের জন্ম দেন। এরপর থেকে ওই দম্পতি লতিফের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
পুলিশ আরও জানায়, ২০২১ সালে ১০ এপ্রিল সুলতানা ইয়াসমিন ও আবু বক্করের বিয়ে হয়। তাদের উভয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। সুলতানার আগের পক্ষে একটি মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর স্বামীর পরকীয়া ও বেপরোয়া চলাফেরার কারণে তাদের মধ্যে কলহ চলে আসছিল। সে কারণে সুলতানা ইয়াসমিন নিজ বাচ্চাদের হত্যা করতে ডোবার পানিতে ফেলে দেন।
সুলতানার বাবা আব্দুল লতিফ বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে জামাই আবু বক্করের সম্পর্ক ভালো না। মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে আবু বক্কর প্রথম চিৎকার করে বাড়ির সবাইকে জানায় বাচ্চাদের পাওয়া যাচ্ছে না। পরে আমি পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ডোবা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে।
ওসি জহিরুল আলম জানান, খবর পেয়ে দুই শিশুর লাশ ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পরিবারের ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়।
তারা হলেন- শিশুদের মা সুলতানা (২৭), বাবা আবু বক্কর (৪০), আব্দুল লতিফের দুই স্ত্রী হেনা বেগম (৬০), ফিরোজা খাতুন (৩৫) এবং সুলতানার প্রথম পক্ষের মেয়ে অহনা (১১)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুলতানা ইয়াসমিন নিজ বাচ্চাদের হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে সুলতানা ইয়াসমিকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। তার স্বামী আবু বক্কর মামলার বাদী হয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করে এর পেছনে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।