ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’: পিরোজপুরে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৬ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ এর প্রভাবে পিরোজপুর জেলায় ঝোড়ো আবহাওয়া বিরাজ করছে। শুক্রবার সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করলেও সন্ধ্যার পরপরই বেড়েছে বৃষ্টির তীব্রতা। জেলার কঁচা, বলেশ্বের, কালিগঙ্গাসহ নদ-নদী গুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, বেড়েছে স্রোতের তীব্রতা। ঝুঁকিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ।
এ দিকে শুক্রবার সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে মানুষজনকে রাস্তায় দেখা যায়নি। সব চেয়ে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে অতি বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে হাট-বাজারে দোকান পাট অধিকাংশই বন্ধ রয়েছে। রাস্তা-ঘাটে কোনো মানুষজন নাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষকের চাষকৃত আমন ধানের। প্রবল ঝড়ো বাতাসে ধানসহ এবং সদ্য ধানের শিষ বের হওয়া আমন ধানের গাছ সব পানিতে শুয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করেছেন চাষি ও কৃষকরা। এ ছাড়াও রবি শষ্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকের। এভাবে অবিরাম বৃষ্টি ও বাতাস হলে গাছের গোড়ায় পানি জমে শাক-সবজিতে পচন ধরার আশঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে, জেলার সমুদ্রগামী মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। সন্ধ্যা নাগাদ জেলার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ আঘাত হানার আশঙ্কা থাকলেও এখন পর্যন্ত জেলার কোথাও কোনো সাইক্লোন শেল্টারে বা আশ্রয় কেন্দ্রে কাউকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, জেলার সাতটি উপজেলায় ৫৬১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ মোকাবিলায় জেলা শহরসহ সাতটি উপজেলায় আটটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের কাছে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা, ৪৬ বান্ডিল টিন, ৪১২ মেট্রিক টন চাল এবং ৫ হাজার ৬০০ কম্বল রয়েছে।
এ ছাড়া দুর্গতদের সেবার জন্য ৬৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্যোগপূর্ব ও পরবর্তী মানুষের সেবা দিতে ১৭০০ সিপিপি সদস্য ও ৩৫০ জন স্কাউট সদস্য কাজ করবেন। উপকূল এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান আরও জানান, জেলার সব চেয়ে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা মঠবাড়িয়ার মাঝেরচর ও খেতাছিড়া এলাকার মানুষের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।