হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীকে মারধর, দিনাজপুর স্টেশনে ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৯ এএম
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে ট্রেনে মারধরের প্রতিবাদে প গড়গামী একতা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনকে আটকে রেখে বিক্ষোভ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রোববার রাতে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে রেখে বিক্ষোভ করে হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, একতা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনে রোববার ঢাকা থেকে দিনাজপুর আসছিলেন হাবিপ্রবির সিএসই অনুষদের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক। ওই শিক্ষার্থীর কাছে টিকিট না থাকায় পথে টাঙ্গাইলে ওই ট্রেনের গার্ড বিশ্বজিৎ তার সঙ্গে বাগবিতন্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় ট্রেনে অপর এক গার্ড এসে আব্দুর রাজ্জাককে আটকে রাখেন। এই খবর হাবিপ্রবিতে ছড়িয়ে পড়লে শতাধিক শিক্ষার্থী রাতে দিনাজপুর রেলস্টেশনে এসে অবস্থান নেন। রাত ৮টা ১০ মিনিটে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিনাজপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছলে হাবিপ্রবির বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে ট্রেনটিকে আটকে রাখেন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
হাবিপ্রবির শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক জানান, একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে তার এক আত্মীয়সহ ঢাকা থেকে দিনাজপুরে আসছিলেন তিনি। একজনের টিকিট না থাকায় তার ওই আত্মীয়কে সিটে বসিয়ে দিয়ে ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। ট্রেনটি টাঙ্গাইল এলাকায় এলে গার্ড এসে তার টিকিট চাইলে টিকিট দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন রাজ্জাক। এরপর তাকে মারধর করেন গার্ড বিশ্বজিৎ।
তবে গার্ড বিশ্বজিৎকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে দিনাজপুর স্টেশনে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকা পড়ায় প গড় ও ঠাকুরগাঁওগামী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন। এ সময় দিনাজপুর রেলস্টেশনের কর্মকর্তা ও জিআরপি পুলিশ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। ফলে দিনাজপুর স্টেশনের আটকে থাকে ট্রেনটি।
খবর পেয়ে দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিমসহ পুলিশ কর্মকর্তারা এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ফেরদৌস আল নোমান দিনাজপুর রেলস্টেশনে এসে স্টেশন সুপার জিয়াউর রহমান ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বিষয়টি তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ট্রেনটিকে ছেড়ে দেয়।দিনাজপুর রেলস্টেশনে একঘণ্টারও বেশি সময় আটকে থাকার পর রাত সোয়া ৯টায় প গড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় একতা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনটি।
দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মমিনুল করিম জানান, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে তিন দিনের মধ্যে সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছে।
দিনাজপুর স্টেশন সুপার জিয়াউর রহমান জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।