মাতারবাড়ি চ্যানেল ৬৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে ভিড়ল জাহাজ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৪১ পিএম
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল দিয়ে জেটিতে ভিড়েছে ৬৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লাবোঝাই একটি জাহাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যানেলটি উদ্বোধনের পরদিন জাহাজটি জেটিতে বার্থিং নিয়েছে। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এই কয়লা আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার মাতারবাড়ি চ্যানেল ও মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এছাড়া মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, জাহাজটি সকাল ১১টায় জেটিতে এসেছে। আমদানি করা কয়লা পরীক্ষার পর খালাস করে রিজার্ভারে নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, এমভি থাউজেন্ড স্প্রিং নামের কয়লাবোঝাই জাহাজটি পানামার পতাকাবাহী। এটি ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে এসেছে। এসব কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ২২৯ মিটার ও ড্রাফট (পানিতে নিমজ্জিত অংশের গভীরতা) সাড়ে ১২ মিটার।
মাতারবাড়ি চ্যানেল দিয়ে আসা এটিই প্রথম জাহাজ নয়। এ নিয়ে ১২০টি জাহাজ এই চ্যানেল দিয়ে জেটিতে এসেছে। এসব জাহাজের মধ্যে ১০টি এসেছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে, বাকিগুলো নিয়ে এসেছে সরঞ্জাম। জাপান সরকারের সহায়তায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মাতারবাড়িতে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে সিপিজিসিবিএল। বর্তমানে এখান থেকে জাতীয় গ্রিডে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মাণসামগ্রী ও কাঁচামাল আনতে একটি চ্যানেল খনন করা হয়। নির্মাণ করা হয় একটি জেটিও। পরবর্তীতে এই চ্যানেল ব্যবহার করে মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প নেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চ্যানেলটি সিপিজিসিবিএল থেকে অধিগ্রহণ করে বন্দর। গভীর সমুদ্রবন্দরের অংশ হিসাবে এখানে থাকবে দুটি টার্মিনাল। এর মধ্যে শনিবার প্রথম টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই টার্মিনাল ২০২৬ সালে চালু হতে পারে।
সূত্রমতে, গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেলের দৈর্ঘ্য ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার, প্রস্থ ৩৫০ মিটার ও গভীরতা ১৬ মিটার। এই চ্যানেল দিয়ে ১৮ মিটার পর্যন্ত গভীরতার জাহাজ জেটিতে ভেড়ানো যাবে। অর্থাৎ ১০ হাজার কনটেইনার ও ১ লাখ টনের বেশি পণ্য নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার লম্বা জাহাজ প্রবেশ করতে পারে।
গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে দুই থেকে তিন বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে। সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরের মতোই এটি হবে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর। পণ্য পরিবহণ খরচ এখনকার চেয়ে ১০ থেকে ২০ ভাগ কমে আসবে। কম সময়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যাবে। প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ এই বন্দর ব্যবহার করলে আর্থিকভাবে দেশ লাভবান হবে।