Logo
Logo
×

সারাদেশ

পটিয়া মাদ্রাসার অস্থিরতা নিয়ে যা বললেন আল্লামা সুলতান যওক নদভী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৬ পিএম

পটিয়া মাদ্রাসার অস্থিরতা নিয়ে যা বললেন আল্লামা সুলতান যওক নদভী

আল্লামা সুলতান যওক নদভী। ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের পটিয়া আল জামিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় সম্প্রতি শূরার নামে যে বৈঠক করা হয়েছে সেটিকে সম্পূর্ণ অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলে আখ্যায়িত করেছেন মাদ্রাসার প্রধান মুরুব্বি আল্লামা সুলতান যওক নদভী। ওই বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলোও অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আল্লামা সুলতান যওক নদভী এসব কথা বলেন। 

বিবৃতিতে বলা হয়, ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাত্রে কতিপয় সিনিয়র শিক্ষকের উসকানি ও আশ্রয়-প্রশ্রয়ে একদল সশস্ত্র বহিরাগত সন্ত্রাসী জামেয়ায় যে তাণ্ডব চালিয়েছে, মুহতামিম মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামজাকে অমানবিক পন্থায় হেনস্থা করে তাদের লিখিত তথাকথিত ইস্তফানামায় জোরপূর্বক দস্তখত নিয়ে রাতের অন্ধকারে জামেয়া থেকে বের করে দিয়েছে, তা ইতোমধ্যে আপনারা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছেন। এরপর ২৯ অক্টোবর শূরার নামে যে বৈঠক করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অসাংবিধানিক। ওই বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সেগুলোও সর্বোতভাবে অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য। 

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ইত্তেহাদের সংবিধান অনুযায়ী শূরার স্থায়ী সভাপতি তথা ইত্তেহাদের সভাপতির অনুমোদনক্রমে শূরা ডাকার একমাত্র অধিকার রয়েছে মুহতামিমের। বিগত মুহতামিম বোখারী সাহেব (রহ.) এর আমলে গঠিত সর্বশেষ শূরা কমিটিতে মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও হাটহাজারীর কারো নাম নেই বিধায় তাদেরকে শূরার সদস্য আখ্যায়িত করা যায় না। তাছাড়া তিনজন ছাড়া ওই বৈঠকে শূরার অন্য কোনো সদস্য উপস্থিত হননি।  

এছাড়া সন্ত্রাসীবেষ্ঠিত অবৈধ বৈঠকে ওবাইদুল্লাহ হামজার কথিত ইস্তফানামা গ্রহণ ও পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদ গঠন দুটোই অবৈধ।

উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, পটিয়া মাদ্রাসায় কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও শিক্ষকমণ্ডলীর সাথে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। কারো সাথে বৈরিতা যেমন নেই, তেমনি কারো প্রতি বিশেষ আকর্ষণও নেই। তবে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামজার প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে এবং যে ক্ষতি সাধন করা হয়েছে, সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে এর বিচার হওয়া জরুরি। অনুরূপ উসকানিদাতা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া ও মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামজার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগমালার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করাও জরুরি; যাতে কিছুটা হলেও মাদরাসার দুর্নাম ঘুছে যায়। এই লক্ষ্যে অচিরেই শূরার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, ইনশাআল্লাহ!

বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ ও নিন্দা  
 

এদিকে গভীর রাতে পটিয়া মাদ্রাসায় ভাঙচুর ও জোরপূর্বক মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক বিভিন্ন আঞ্চলিক শিক্ষাবোর্ড ও সংগঠন। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনায় প্রতিবাদ করছেন অনেকে।  

বুধবার জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী ও সেক্রেটারি মাওলানা রেজাউল করীম আবরার এক বিবৃতিতে বলেন, পটিয়া মাদ্রাসায় সম্প্রতি যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে ইসলাম ও কওমি মাদ্রাসাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের তীব্র বহিঃপ্রকাশ।  

কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলইয়াকে সংকট নিরসনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ইতোপূর্বে হাটহাজারী মাদ্রাসায় যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত না করার ফলেই পটিয়ায় এমন ঘটনা পুনরায় সংগঠিত হয়েছে। তাই কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আল-হাইয়াতুল উলইয়া ও জামিয়া পটিয়ার তত্বাবধায়ক বোর্ড ইত্তেহাদুল মাদারিসের দায়িত্বশীলদের সংকট সমাধানকল্পে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে এসে মাদ্রাসার শিক্ষাকার্যক্রমকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।  

এছাড়া নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরের আঞ্চলিক শিক্ষাবোর্ড জমইয়্যাতুল মাদারিসিল কওমিয়াহ, ফেনী জেলার আঞ্চলিক শিক্ষাবোর্ড তানযীমুল মাদারিসিল কওমিয়াহ, আবনায়ে জামেয়া পটিয়া ঢাকা ও আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা কমিটি থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।   
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম