Logo
Logo
×

সারাদেশ

দাদনের চাপে জীবন গেল কৃষকের

Icon

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ১১:০৯ পিএম

দাদনের চাপে জীবন গেল কৃষকের

সুদের টাকার (দাদন ব্যবসায়ী) চাপ সইতে না পেরে নাটোরের সিংড়ায় জুয়েল আলী মণ্ডল (৫০) নামের এক কৃষক গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার দুপুর ১টার দিকে চলনবিলের সাতপুকুরিয়া-ডাহিয়ার ডুবন্ত সড়ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত কৃষক উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের হিজলী গ্রামের মোজাফ্ফর আলী মণ্ডলের ছেলে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি কৃষক জুয়েল আলী মণ্ডল পারিবারিক সমস্যার কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে এলাকার বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নেন। এরপর শুরু হয় দাদন ব্যবসায়ীদের চাপাচাপি। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্র রাত্রিযাপন শুরু করেন। সোমবার দুপুরে বিয়াশমাধা বাঁশবাড়িয়া তার বোন বুলবুলি বেগমের বাড়ি থেকে সিংড়া বাজারে আসার পথে সাতপুকুরিয়া-ডাহিয়ার ডুবন্ত সড়ক এলাকায় গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তার পরিবারের লোকজন বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে মৃত কৃষকের ধর্ম ছেলে নজরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, তিনি নিজেও তাকে ৭৭ মণ ভুট্টা বাকিতে দিয়েছিলেন। আর এর জন্য ৭২ হাজার টাকাও পেতেন; কিন্তু কোনো দিনও টাকার জন্য চাপ দেননি। তবে এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছে কৃষক জুয়েল আলী ১০-১২ লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। চড়া সুদের দাদন ব্যবসায়ীদের চাপে তাকে বাড়িছাড়াও হতে হয়েছে। বিশেষ করে সিংড়া পৌরসভার জয়তুন বেগম নামের এক মহিলা কাউন্সিলের কাছ থেকে চড়া সুদে ৩ লাখ টাকা নিয়ে তাকে প্রায় ৩ লাখ টাকা সুদ গুনতে হয়েছে। আজ থেকে ৬-৭ দিন আগে ওই মহিলা কাউন্সিলর তার (কৃষক জুয়েল) বাড়িতে এসে অনেক উল্টাপাল্টা কথাও শুনিয়ে গেছেন। একপর্যায়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করতে পেরেছি। এছাড়াও সুদের টাকা পেতেন মহেশচন্দ্রপুর গ্রামের রাজু নামের এক ব্যক্তি।

তিনি জানান, কথা হচ্ছিল জমিজমা বিক্রি করে সবার সুদের টাকা পরিশোধ করা হবে; কিন্তু এর মধ্যে পালিয়ে বেড়াতেই অবশেষে তাকে জীবন দিতে হলো। আর আমিও একজন পাওনাদার হলেও তার পরিবারের পাশে থেকেছি। সব সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারলাম না।

এ বিষয়ে সুদকারবারি পৌর কাউন্সিলর জয়তুন বেগম মোবাইল ফোনে প্রথমে বলেন- আমি কত টাকা পাব তার কাছ থেকেই জানেন। পরে তার মৃত্যুর খবর জানার পর তিনি বলেন, আমি অনেক টাকা দিয়েছি। আর কিছু বলতে পারব না বলেই ফোন কেটে দেন।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শামীম আলম বলেন, কৃষক জুয়েল আলী মণ্ডলের অবস্থা খারাপ দেখে রাজশাহীতে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সিংড়া থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম