Logo
Logo
×

সারাদেশ

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রথম দিনে পার হয়ে উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা

Icon

এমএ কাউসার, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১৪ পিএম

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রথম দিনে পার হয়ে উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা

চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে প্রথম পার হওয়া ব্যক্তি হতে শনিবার রাত ১২টা থেকেই পতেঙ্গা প্রান্তে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন মো. মামুন। রোববার ভোর ৬টায় যাতায়াতের জন্য টানেল খুলে দিতেই প্রাইভেট কার চালিয়ে স্বপ্নের টানেলে প্রবেশ করেন তিনি। তবে একমাত্র টোল প্লাজাটি আনোয়ারাপ্রান্তে হওয়ায় প্রথম সাধারণ যাত্রী হিসাবে টোল দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন রাত ৩টা থেকে অপেক্ষায় থাকা মুন্সীগঞ্জের ব্যবসায়ী জুয়েল রানা। টানেলের প্রথম ব্যক্তি হিসাবে পার হতে দুদিন আগে কক্সবাজার গিয়েছিলেন তিনি।

সেখান থেকে ফেরার পথে টানেল দিয়ে বের হয়ে রওয়ানা দেন মুন্সীগঞ্জের উদ্দেশে। এরপর থেকে উভয় প্রান্ত দিয়ে উচ্ছ্বসিত মানুষের গাড়ি চলাচল শুরু হয়। এর মধ্যে ছিলেন বিমানবন্দরগামী ও বিমানবন্দর ফেরত প্রবাসী, ব্যবসায়ী, সাধারণ যাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এদিন ১৬টি বুথের ১২টিতে টোল আদায় করা হয়। বাকি চারটি বুথ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

এদিকে শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে দেখে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন টোল সংগ্রহকারী ঝুমুর আক্তার। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে টোল আদায়ের ছবি টেলিভিশনে দেখে তার বাবা-মা খুশিতে কেঁদে ফেলেছেন। প্রধানমন্ত্রী টানেলের প্রথম টোল প্রদানকারী এবং তার কাছ থেকে টোল নিতে পেরে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করছেন।

টানেল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোববার যান চলাচল শুরুর প্রথম ১২ ঘণ্টায় (সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) ২ হাজার ১৭টি গাড়ি পারাপার হয়েছে। এসব গাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু টানেলে প্রথম টোল দেওয়া জুয়েল রানা বলেন, টানেলে প্রবেশ করতে প্রায় ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। তবে টানেল পারের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। বিশ্বাস করতে অন্যরকম লাগছেÑবাংলাদেশ নদীর নিচে একটা রাস্তা বানিয়ে ফেলেছে।

পতেঙ্গা প্রান্তে রাত ১২টা থেকে যাত্রীবাহী বাস নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন বিডি বাস লাভার নামে একটি গ্রুপের তরুণরা। ফুল ও কাপড় দিয়ে সাজানো মারশা পরিবহণের এ বাসটিই প্রথম টানেল অতিক্রম করেছে।

গ্রুপের এক সদস্য জোনায়েদ জানান, ভোর ৬টায় টানেল খুলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবেশ করেন তারা। এ সময় ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়েছেন গ্রুপের সদস্যরা।

এদিকে নিজেই গাড়ি চালিয়ে টানেল পার হয়ে আনোয়ারায় যান আনিতা মুবাশ্বিরা। তিনি বলেন, টানেল পার হওয়ার সময় গর্ব হচ্ছিল বাংলাদেশি হিসাবে। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম টানেল আমাদেরই।

বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, টানেল নির্মাণ শেষ হওয়ার পাশাপাশি আমার দায়িত্ব শেষ হয়েছে। তবে প্রথম দিন কী পরিমাণ যান চলাচল হয়েছে, সেটি আমারও জানার কৌতূহল ছিল। দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ পরিবহণ যাতায়াত করেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে হরতালের প্রভাব কিছুটা হলেও পড়েছে। যান চলাচলের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

১০ হাজার ৬৮৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টালেন এটি। ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে দুই সুড়ঙ্গ পথের এ টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতা। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে আছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম