Logo
Logo
×

সারাদেশ

বিক্ষোভ-ভাঙচুর

জোর করে পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

Icon

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৩ পিএম

জোর করে পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রামের আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসা।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কওমি মাদ্রাসা চট্টগ্রামের আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ্ হামজার কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

শনিবার গভীর রাতে মাদ্রাসার ভেতরে বিরোধী পক্ষের ছাত্রদের হাতে হেনস্তার শিকার হন তিনি। এ সময় তার বাসভবনে ভাঙচুরের পাশাপাশি বেশকিছু ছাত্র জোরপূর্বক মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নেন।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ্ হামজা রোববার পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং আরও ৬০-৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। 

জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাদ্রাসায় ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে অনেকদিন ধরেই মতবিরোধ চলছিল। ওই মতবিরোধে গত দুই সপ্তাহ ধরে দুইপক্ষ সহিংস হয়ে উঠে। 

শনিবার রাত ১২টার পর থেকে মাদ্রাসার বেশকিছু ছাত্র মহাপরিচালকের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় মাদ্রাসার মাইকে বিভিন্ন উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে মহাপরিচালকের বাস ভবনে ভাঙচুর চালায়। 

এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা মহাপরিচালকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত জাকারিয়াসহ বেশ কয়েকজনকে পিটিয়ে আহত করে। পরে জাকারিয়াকে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে মাথায় পাঁচটি সেলাই দেওয়া হয়। রাতে ঘটনা শুরুর পর পুলিশ ও সংবাদকর্মীরা মাদ্রাসায় গেলেও ছাত্ররা পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়নি। ওই সময় ভেতরে কিছু ছাত্র লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়। 

বিক্ষোভরত ওই ছাত্রদের অভিযোগ, মাওলানা ওবাইদুল্লাহ হামজাহ মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে অসাদাচারণ, স্বেচ্ছাচারিতা, ছাত্রদের বিভিন্ন কার্যক্রমে বাধা দেন। তার এসব আচরণের কারণে ছাত্র-শিক্ষকদের একাংশ ফুঁসে উঠে। 

শনিবার রাতের ওই ঘটনার পর রোববার বিকালে পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মাদ্রাসার মহাপরিচালক ওবাইদুল্লাহ্ হামজা। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন তার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। 

রোববার বিকালেও মাদ্রাসা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি দেখা গেছে। মাদ্রাসার প্রধান প্রধান গেটগুলো বন্ধ রয়েছে। 

এদিন রাতে আন্দোলনকারী ওই ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে শূরা কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে সে বৈঠকে শূরার প্রধান ও মাদ্রাসার প্রধান মুরুব্বি আল্লামা সুলতান যওক নদভী উপস্থিত ছিলেন না। বিপরীতে হেফাজত আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিলুর রহমান কাসেমী এতে উপস্থিত ছিলেন।  

মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, বিক্ষোভের পর থেকে মহাপরিচালক মাওলানা ওবাইদুল্লাহ্ হামজা বিরোধী ছাত্র-শিক্ষকরা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। আগামী ২ নভেম্বর মাদ্রাসার শূরার বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে শিক্ষকদের দুপক্ষের বক্তব্য শুনে সমাধানের কথা ছিল; কিন্তু তার আগেই বিক্ষোভের মাধ্যমে ওবাইদুল্লাহ্ হামজাকে সরিয়ে দেয় বিরোধীরা। তাদের নিয়ন্ত্রণেই হেফাজত আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপালকে এনে একটি বৈঠক করা হয়েছে। যদিও তারা কেউ পটিয়া মাদ্রাসার শূরা সদস্য নয়।  

পটিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার বলেন, মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কিছুদিন ধরে চলে আসছিল। এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠকে বিষয়টি সমাধানের কথা ছিল। সবশেষ শনিবার নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম