ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে জেটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ২২ জাহাজ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৩৫ পিএম
ঘূর্ণিঝড় হামুনের সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার বিকাল থেকে বন্দরে পণ্য হ্যান্ডলিং বন্ধ রাখা হয়েছে। জেটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ২২টি জাহাজ। জারি করা হয়েছে বন্দরের নিজস্ব দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অ্যালার্ট-৩। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলার পর বন্দর নিজস্ব এই অ্যালার্ট জারি করেছে। সংকেত আরও বাড়লে বন্দরের সর্বোচ্চ অ্যালার্ট-৪ জারি করা হতে পারে।
দেশের প্রধান এই বন্দর দিয়ে সমুদ্রকেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানির ৯২ শতাংশই হয়ে থাকে। সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের সময় বন্দর কর্তৃপক্ষ জেটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও সরঞ্জাম সুরক্ষার উদ্যোগ নেয়।
বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আবহাওয়া অধিদপ্তর মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৭, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের জন্য ৬ এবং মোংলা সমুদ্র বন্দরের জন্য ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। মূলত এর পরপরই বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-৩ জারি করা হয়। এই অ্যালার্ট জারি করা হলে বন্দরের নিরাপত্তায় পুরোদমে প্রস্তুতি নিতে হয়।
একই সঙ্গে বন্দরের মূল্যবান ক্রেনসহ পণ্য হ্যান্ডলিং কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়ে থাকে, যেন জলোচ্ছ্বাস হলে ভেসে না যায়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বিকালে যুগান্তরকে জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের মোকাবিলায় বন্দর কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার দুপুরে সভা করেছে। এতে বন্দর চেয়ারম্যান, বন্দরের সব বিভাগের কর্মকর্তা, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
তিনি বলেন, জেটিতে ২২টি জাহাজ ছিল। বিকালে জোয়ারের সময় এসব জাহাজকে বহিঃনোঙরে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। অবস্থানরত ৫২টি জাহাজকে সাগরের আরও গভীরে গিয়ে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে। কর্ণফুলী নদীতে থাকা লাইটার জাহাজসহ ছোট নৌযানগুলোকে শাহ আমানত সেতুর দিকে উজানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেটিতে বিকাল ৪টা থেকে পণ্য ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়েছে। পণ্য খালাস বৃষ্টির কারণে আরও আগে থেকেই বন্ধ রয়েছে। সীমিত আকারে পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে, তবে তাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে যে কেনো সময়। বন্দরের বিভিন্ন স্থাপনা ও সরঞ্জামের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেতের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব অ্যালার্ট জারি করে। সতর্কতা সংকেত ৩ দেওয়া হলে বন্দরের অ্যালার্ট-১ জারি করা হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করলে বন্দর অ্যালার্ট-২ জারি করে। ৫, ৬ ও ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের জন্য জারি করা হয় অ্যালার্ট-৩। ৮ নম্বর মহাবিপদসংকেত জারি করা হলে বন্দর নিজস্ব সর্বোচ্চ অ্যালার্ট-৪ জারি করে থাকে।