‘রাতেই আমার ছেলে বিমানে সৌদি যেত’ মায়ের আহাজারি
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৪২ এএম
ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত রাসেলের বিদেশ যাওয়া হলো না। ছবি: যুগান্তর
ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত রাসেলের বিদেশ যাওয়া হলো না। সোমবার বিকালে আন্তঃনগর এগারসিন্ধু ট্রেন দুর্ঘটনায় ট্রেনের চাকার নিচে পড়ে রাসেল নিহত হয়।
মা হাসনা বেগম ছেলে রাসেলকে বিমানবন্দরে বিদায় জানাতে ট্রেন যোগে ঢাকায় আসছিলেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় ছেলে মারা গেলেও আল্লাহর অশেষ কৃপায় প্রাণে বেঁচে যান মা হাসনা।
আরও পড়ুন: ‘আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন’
নিজে বেঁচে গেলেও ছেলের মৃত্যুতে শোক বিহ্বল হয়ে পড়েছেন। আর ছেলের লাশের পাশে বসে আজাহারি করে বলছেন, আজ রাতে আমার ছেলে বিমানে সৌদি যাওয়ার কথা ছিল। ৪ লাখ টাকা খরচ করে ভিসা পেয়েছিল।
জমি বিক্রি ও মহাজনের কাছ থেকে সুদে টাকা জোগাড় করে সংসারের সুখের আশায় বিদেশ পাঠাতে চেয়েছিলাম। আমার স্বপ্ন ট্রেন কেড়ে নিল।
আমি গরীব মানুষ। ছেলের লাশ আমার স্বপ্নকে চুরমার করে দিল। এসব কথা বলতে বলতে মাটিতে বসে কান্নায় লুটিয়ে পড়েন। তার আহাজারিতে আশপাশের সবার চোখ বেয়ে অঝোরে পানি ঝরছিল। আর মনে হচ্ছে সেখানের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠছিল।
কাছে কোন স্বজন ছিল না। এ লাশের বোঝা নিয়ে কিভাবে বাড়ী ফিরবে, কিভাবে কবর দিবে একথাগুলো বলে বুকফাটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল মা হাসনা বেগম। পুলিশ, র্যাব, সাধারণ মানুষ বা দর্শনার্থীরা তাকে শান্ত্বনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছিল না।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকালে ভৈরব উপজেলার জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি যাত্রীসহ উল্টে যায়। দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২০ জন নিহত হয়্। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক।