স্বর্ণা বেগম। ছবি: যুগান্তর
স্বর্ণা বেগম। ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সোমবার গ্রামের বাড়ি থেকে ট্রেনযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওয়া দিয়েছিলেন। পরে ওই ট্রেনটি ভৈরবে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে অনেকে প্রাণ হারায়। জীবন বাজি রেখে জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান স্বর্ণা। তার বাড়ী কিশোরগঞ্জ সদরে। সেই ভয়াল দৃশ্য যুগান্তরকে শুনিয়েছেন স্বর্ণা।
স্বর্ণা জানায় , সোমবার দুপুরে আমি এগারসিন্ধু ট্রেনের যাত্রী ছিলাম। বাসা থেকে বের হয়ে ট্রেনে যাচ্ছিলাম ঢাকায়। ট্রেনটি বিকেল ২টা ৪০ মিনিটে ভৈরব রেলস্টেশনে পৌঁছে। পরে ট্রেনের ইঞ্জিন ঘুরিয়ে দুপুর ৩টা ১২ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনটি ছাড়ে।
ট্রেন ছাড়ার তিন মিনিট পর হঠাৎ বিকট শব্দে ট্রেনের বগি ঝাঁকুনি হয়। প্রথমে বুঝতে পারিনি ট্রেনে কি হয়েছে। পরে দেখি ট্রেন থেমে গেছে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি পিছনের দিকে কয়েকটি বগি লাইন থেকে পড়ে গেছে। এসময় আমি ভয়ে আতংকিত হয়ে কাঁপতে থাকি।
ট্রেনের অন্য বগির যাত্রীরা লাফিয়ে মাটিতে পড়ছে। কিছু বুঝার আগেই আমিও প্রাণ বাঁচাতে ট্রেন থেকে লাফ দিই মাটিতে। এ সময় আমি হাতে পায়ে প্রচুর ব্যথা পাই। পরে দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার পর ট্রেন দুর্ঘটনার কথা জানতে পারি।
স্বর্না বলেন আমার বগির কেউ মারা যায়নি তবে অনেকে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। জীবনে এমন ঘটনা কখনো দেখেনি। পরে বাসায় দুর্ঘটনার খবর জানায়। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। যুগান্তর প্রতিনিধির কাছে এভাবেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন স্বর্ণা। আতঙ্কের রেশ না কাটায় ভৈরব রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে কাপঁতে কাপঁতে কথাগুলো বলছিলেন এ শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকালে ভৈরব উপজেলার জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনায় এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি যাত্রীসহ উল্টে যায়। দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২০ জন নিহত হয়্। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক।