চট্টগ্রামে মাসোহারা দিয়ে চলছে ফিটনেসহীন গাড়ি
পাহাড়তলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫৫ পিএম
ফিটনেসহীন গাড়ি সড়কে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে, কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ করলেও মাসিক মাসোহারায় চলছে বেপরোয়া গতিতে। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলেও দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রাম শহর।
এসব ফিটনেসহীন গাড়ি মাসিক মাসোহারা দিয়েই চলছে বলে জানিয়েছেন গাড়ির মালিক ও চালকরা। প্রায় ৪০টি কোম্পানির বিভিন্ন ব্যানারের নামে সড়কে চলে এসব গাড়ি। প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা টিআই অমলেন্দুকে দিতে হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন টিআই অমলেন্দু।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার মোড়ে ফিটনেসহীন একটি ডাম্পট্রাক ট্টাফিক পুলিশের দায়িত্বরত সার্জেন্ট শাখাওয়াত ও সার্জেন্ট সোহেল কাগজপত্র দেখতে চাইলে চালক অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন। গাড়ির চালক বলেন, টিআই অমলেন্দু স্যার বললেই কাগজ দেখাব, তার সঙ্গে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা কন্টাক্ট।
দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা এ কথা শুনে ইতস্তবোধ করেন। দীর্ঘ চল্লিশ মিনিট পরে টিআই অমলেন্দু চালকের মোবাইলে কথা বললেই সার্জেন্ট শাখাওয়াতকে গাড়ির কাগজপত্র দেন। গাড়ির কাগজপত্রে দেখা যায়- ডেট ফেল রয়েছে প্রায় দুই বছর। তবে কাগজপত্র আপডেট না থাকায় সার্জেন্ট শাখাওয়াত গাড়িটি ডাম্পিংয়ে পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে টিআই অমলেন্দু বলেন, হালিশহরে টিআই ছিলাম পৌনে দুই বছর, এখন অলংকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় টিআইগিরি করি। আমি পুজোর ছুটিতে আছি পরে কথা বলব- বলেই ফোন কেটে দেন। তবে মাসিক মাসোহারা নেওয়ার প্রশ্নে চুপ থেকেছেন টিআই অমলেন্দু।
সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অলংকার মোড়সহ শহর ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি চলাচল করতে হলে টিআই অমলেন্দুকে ম্যানেজ করে চলতে হয়। না হয় কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ডাম্পিংয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে মাসিক মাসোহারা দিয়ে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ অনেকের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক গাড়ির মালিক বলেছেন, আমরা বক্তব্য দিলে পরে সড়কে গাড়িই চালাতে দেবে না। টিআই অমলেন্দু অনেক ক্ষমতাবান, ডিসি তারেক সাহেব তার কাছের মানুষ। কোনো অভিযোগও আমলে নেয় না। একজন টিআই বদলি হয়ে পিআই হওয়ার নিয়ম থাকলেও ক্ষমতার কারণে হালিশহর টিআই হতে পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অলংকার মোড়ে পাহাড়তলী টিআই হিসেবে যোগদান করেছেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক আব্দুল মান্নান যুগান্তরকে বলেন, রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয়। গাড়ির কাগজপত্র দেখতে হলে টিআইয়ের অনুমতি নিতে হবে কেন? গাড়ির কাগজপত্র দেখাতে নিষেধ করা আইনত অপরাধ।
সঠিক তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।