ফরিদপুরে বিলুপ্তপ্রায় মিঠাপানির সাত ফুট লম্বা একটি কুমির উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। গত ১১ অক্টোবর প্রথম ফরিদপুরের ভুবনেশ্বর নদে দেখা মেলে কুমিরটি। গত দুই দিন চেষ্টার পর অবশেষে মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়া ভুবনেশ্বর নদ থেকে এলাকাবাসীর সহায়তায় কুমিরটি উদ্ধার করতে সক্ষম হন বন বিভাগের কর্মীরা। উদ্ধারের পর কুমিরটি সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে নেওয়া হবে বলে জানান উদ্ধারকারী কর্মকর্তা।
স্থানীয়রা জানান, গত ১১ অক্টোবর বিকালে জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের পদ্মার শাখা ভুবনেশ্বর নদে প্রথম কুমিরটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত কয়েকবার কুমিরটি সেখানে পানিতে ভেসে ওঠে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শিশু ও বয়স্করা নদের পানিতে নেমে গোসল কিংবা মাছ ধরতে ভয়ে থাকেন।
স্থানীয়রা বিষয়টি বন বিভাগ ও প্রশাসনকে জানালে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ গিয়ে এলাকার মানুষকে সতর্ক করে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ থেকে মাইকিং করে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয়। এদিকে, ফরিদপুর বন বিভাগ কুমিরের বিষয়টি খুলনা প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগকে জানায়। খুলনা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ টিম গত রোববার ফরিদপুরে আসে। তারা রোববার যে জায়গায় প্রথমে কুমিরটি দেখা গিয়েছিলেন সেখানে পরিদর্শন করে কুমিরের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
খুলনা থেকে আসা প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের প্রাণী বিশেষজ্ঞ মফিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কুমিরটি উদ্ধারে রোববার দুপুরে ফরিদপুরের সদর উপজেলার পাটপাশা এলাকায় পরিদর্শনে যান উদ্ধারকারী দল। তবে সেখানে কুমিরের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে মঙ্গলবার দুপুরে গজারিয়ায় ব্রিজের কাছে ভুবনেশ্বর নদে কুমিরটি দেখতে পেয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা করে কুমিরটি জাল দিয়ে আটক করে জীবন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় নদের দুপাড়ে হাজার হাজার উৎসুক জনতা কুমির ধরার দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান।
মফিদুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, উদ্ধার কুমিরটি মিঠাপানির একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির। প্রায় সাত ফুট লম্বা এটি। কুমিরটি প্রথমে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে নেওয়া হবে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।