ঋণ থেকে বাঁচতে নিজেই খুনের নাটক সাজান কামরুল, অতঃপর...
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:২৮ পিএম
ঋণ থেকে বাঁচতে নিজেই খুনের নাটক সাজান কামরুল। ছবি: যুগান্তর
খুন হওয়ার নাটক সাজিয়ে নিজেই লাপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের হারেস আলীর ছেলে ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম (২৪)।
পুলিশের অনুসন্ধান ও অভিযানে কথিত খুন হওয়া কামরুলকে মোহনপুর থানা পুলিশ রোববার রাতে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে মোহনপুরে আনা হয়।
প্রতারণার মামলার পর সোমবার বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিজের খুন হওয়ার নাটক সাজিয়ে উধাও হওয়া ও পরে গ্রেফতারের ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের হারেস আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম পাকুড়িয়া হাটে দোকান ভাড়া নিয়ে ভুসি মালের ব্যবসা করতেন। ব্যবসা করতে গিয়ে কামরুল ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। নিখোঁজ হওয়ার আগে নিজে খুন হওয়ার নাটক সাজানোর পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৪ অক্টোবর রাতে দোকানের ভেতরে শয়ন করেন। পর দিন সকালে এলাকাবাসী তার দোকানটি খোলা অবস্থায় দেখতে পান। দোকানের ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রক্তও দেখতে পান এলাকার মানুষ। পরে লোকজন পুলিশে খবর দেয়।
তারা পুলিশকে জানান, কামরুল রাতে দোকানে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী পুলিশের কাছে দাবি করেন।
এদিকে কামরুলের নিখোঁজ হওয়া ও তার দোকানের ভেতরে ছড়ানো রক্ত দেখে রাজশাহী সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। তবে তারা ক্রাইম সিনের আওতায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বুঝতে পারেন কামরুলের দোকানে ছড়ানো রক্ত কোনো মানুষের নয়। মুরগি বা অন্য কোনো প্রাণীর হতে পারে। পুলিশের সন্দেহ হয় কামরুল খুন হওয়ার নাটক করে উধাও হয়েছেন।
পুলিশ বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারেন, কামরুল ঢাকায় অবস্থান করছেন। এই গোপন সংবাদের সূত্র ধরে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে রোববার রাতে কামরুলকে গ্রেফতার করে মোহনপুর পুলিশ।
সোমবার সকালে তাকে মোহনপুর থানায় আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে খুন হওয়ার নাটক সাজানোর কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
মোহনপুর থানার ওসি জানান, খুন হওয়ার নাটক সাজানোর অভিযোগে কামরুলের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রতারণার মামলা করেছে। সোমবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কামরুল ইসলাম পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, ঋণগ্রস্ত হওয়ায় তিনি খুন হওয়ার নাটক করেছিলেন। সেই লক্ষ্যে তিনি দোকানে মুরগির রক্ত ছিটিয়ে দিয়ে লাপাত্তা হন।