Logo
Logo
×

সারাদেশ

জমি না থাকায় বাদুড়ের সঙ্গেই বসবাস!

Icon

ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর

প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:১১ পিএম

জমি না থাকায় বাদুড়ের সঙ্গেই বসবাস!

সরকারি জমিতে শতবর্ষী রেইনট্রি। গাছের ডাল ঝুলছে শত শত বাদুড়। এ যেন বাদুড়ের রাজ্য। গাছতলায় চার দশক ধরে বসবাস করছে চারটি পরিবার। বাদুড়ের আশ্রয় গাছের ডালে, আর পরিবার চারটির ঠাঁই মিলেছে গাছতলায়। বাদুড়ের মলমূত্রে অতিষ্ঠ মানুষ। তবুও নিজস্ব জমি জায়গা না থাকায় স্থান ত্যাগ করতে পারছে না পরিবারগুলো। এ চিত্র যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার পারবাজার এলাকায় কপোতাক্ষ নদের পাড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রেইনট্রি গাছটিতে উলটো হয়ে ঝুলে থাকে হাজারো বাদুড়। গাছের শাখা-প্রশাখায় হুকের মতো পা আটকে ঝুলে থাকে। সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিশাচর এ প্রাণী খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। ভোরের আলো ফোটার আগেই ফিরে আসে আবাসস্থলে। পাখির মতো উড়লেও আকৃতির কারণে এবং নানা কল্প-কাহিনির আতঙ্ক সৃষ্টিকারী প্রাণী হিসেবে উপস্থাপিত হওয়ায় বাদুড়ের কদর নেই। তবে প্রতিকূলতার মধ্যেও এ রেইনট্রিতে নির্ভয়ে আবাস গড়ে তুলেছে বাদুড়। বিলুপ্তপ্রায় স্তন্যপায়ী এই প্রাণীটি এক সময় প্রচুর দেখা যেত। জলবায়ু পরিবর্তন, বৃক্ষ নিধনসহ নানা কারণে বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

মোবারবকপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল জলির বলেন, ছোট বেলায় দেখেছি এ অঞ্চলে অনেক বড় গাছ ছিল। সেই গাছে প্রচুর বাদুড় থাকত। এখন একটি বড় গাছ আছে। এ গাছে বাদুড়ের বসবাস রয়েছে।

পারবাজার এলাকার বাসিন্দা হামিদ গাজী (৭২) বলেন, আগে এখানকার পরিবেশ ভালো ছিল। বাদুড়ের সংখ্যাও অনেক বেশি ছিল। বর্তমানে ৫-৬ হাজার বাদুড় এখানে বাস করে। এ গাছে ত্রিশ বছর ধরে বাদুড় দেখছি। গাছতলায় আমরা খুব কষ্ট করে বসবাস করছি। আমাদের জমিজমা নেই। তাই গাছের নিচেই সরকারি জমিতে বসবাস করছি। অন্য জায়গা পেলে আমরা চলে যেতাম।

আরেক বাসিন্দা অভিরণ খাতুন বলেন, আমরা চারটি পরিবার এখানে বসবাস করি। আমাদের জমিজমা কিছুই নেই। দিন আনি, দিনে খাই। আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বাদুড়ের পায়খানায় গাছের নিচে চলাচল করা যায় না।

গাছের ডালে অসংখ্য বাদুড়ের আবাস হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন গাছতলায় বসবসাকারী চারটি পরিবার। বাদুড়ের মলমূত্রে নোংরা হয় বাড়িঘর, উঠান। বিষাক্ত মলমূত্রের মধ্যেই তারা বছরের পর বছর বসবাস করছেন। নিজেদের এক টুকরো জমি না থাকায় সরকারি এ জমিতেই আকড়ে আছেন তারা।

অসহায় পরিবারগুলো জানায়, বাদুরের সঙ্গে কোনো খেদ নেই। সরকারিভাবে জমি বরাদ্দ পেলে এ গাছতলা ছেড়ে যেতে চান তারা।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, শতবর্ষী রেইনট্রি গাছে শত শত বাদুড় আছে। এ বাদুড় সংরক্ষণে বনবিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই গাছতলায় বসবাসকারী পরিবারগুলোকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ বাড়ি বরাদ্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম