ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে টাকা আদায়, ছাত্রলীগের সাবেক ৩ নেতা গ্রেপ্তার

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৪৮ এএম

নীলফামারীতে ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করে টাকা আদায় করায় ছাত্রলীগের সাবেক ৩ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার দিবাগত রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, পৌর শহরের সওদাগরপাড়া এলাকার মৃত আলিমুজ্জামান মিলনের ছেলে নাদিফ জামান উষা (২৪), বাড়াইপাড়ার মৃত আব্দুল ওহাবের ছেলে তানভীর আহম্মেদ প্রান্ত (২৩) ও ডালপট্টি এলাকার নেয়ামত আহমেদের ছেলে ফজলে রাব্বী (২৩)।
উষা নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক। বাকি দুজনও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে নীলফামারী সদর উপজেলার চাপড়া সরমজানি যাদুরহাট এলাকার নূর ইসলামের ছেলে সজল আহমেদ ইসলামী ব্যাংকের নীলফামারী শাখায় ৫০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার জন্য ইজিবাইক যোগে জেলা শহরের চৌরঙ্গীর মোড়ে নামেন।
এরপর ব্যাংকে যাওয়ার উদ্দেশে আরেকটি ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় সুইট মার্ট মিষ্টির দোকানের সামনে প্রথমে দুজন ব্যক্তি এসে সজলের নাম ও ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন এবং পরে তারা নিজেদের ডিবির লোক পরিচয় দেন। ডিবি পুলিশের বড় কর্মকর্তার কাছে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখান।
সজল এ নিয়ে তাদের সঙ্গে তর্ক করলে রিকশাওয়ালা ও পথচারী জড়ো হতে থাকে। তখন তাকে জোর করে একটি রিকশায় উঠিয়ে প্রথমে শহরের এবাদত প্লাজার সামনে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সংলগ্ন গলি দিয়ে পূর্ব দিকের পুকুর পাড়ে নিয়ে যান। সেখানে আরও দুই জন মোটরসাইকেলে এসে সজল তুলে নিয়ে মানিকের মোড় হয়ে বাইপাস মডেল মসজিদের পাশ দিয়ে দক্ষিণে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়।
বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে সেখানে সজলের প্যান্টের পকেটে থাকা ৫০ হাজার টাকা বের করে নেয় এবং বিকাশে থাকা ৬৫০ টাকা ক্যাশ আউট করে। একপর্যায়ে সজলের হাতে নেশা জাতীয় দ্রব্য ধরিয়ে দিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে তারা।
এরপর সজলের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা পাওনা আছে মর্মে ১০০ টাকার তিনটি নন জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে ভিডিও ধারণ করে। সজল সন্ধ্যার দিকে কৌশলে সেখান থেকে সদরের টুপামারী শাপলাপাড়ার নির্মাণাধীন একটি বাড়িতে ঢুকে চিৎকার করলে এলাকার লোকজন জড়ো হয়। তখন সেই চার যুবক পালিয়ে যায়। তবে স্থানীয় লোকজন তাদের চিনতে পারেন।
রাতেই সজল বাদী হয়ে থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১৫ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে নীলফামারী থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
নীলফামারী সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরই বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’