Logo
Logo
×

সারাদেশ

মালি থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুদকের চার্জশিট

Icon

যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৫২ পিএম

মালি থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুদকের চার্জশিট

চাকরি শুরু করেছিলেন ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪র্থ শ্রেণির মালি পদে। চাকরি জীবনে পদোন্নতি নিয়ে সর্বশেষ ২০১৮ সালে নড়াইল সদর হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদ থেকে অবসর নেন মো. আব্দুর রউফ। তার বিরুদ্ধে পৌনে ৬ কোটি টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সাড়ে ৩ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

রোববার দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এইচার্জশিট দাখিল করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক যশোরের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন।

অভিযুক্ত মো. আব্দুর রউফ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার সোনাকুড় গ্রামের মৃত মুন্সী আফছার উদ্দিনের ছেলে ও বর্তমানে পুলেরহাট তপসীডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, ১৯৭৮ সালের ৩ জুলাই আব্দুর রউফ ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪র্থ শ্রেণির মালি পদে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি চাকরি গ্রহণ করার পর পদোন্নতি পেয়ে বিভিন্ন পদে চাকরি করার পর সর্বশেষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর নড়াইল সদর হাসপাতাল হতে অবসর গ্রহণ করেন। আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনে তার সম্পদের হিসাব দাখিল করার জন্য তার প্রতি সম্পদ বিবরণী ফরম জারি করা হয়।

তিনি দুদকে তার নিজ নামে ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে ৩৪টি দলিলের মাধ্যমে জমি ক্রয়সহ ৪ কোটি ২২ লাখ ৩৮ হাজার ৭৭২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ২৬ লাখ ৬০ হাজার ৯০৬ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৯৯ হাজার ৭০৮ টাকার সম্পদ থাকার ঘোষণা দেন।

দুদকের তদন্তকালে আসামির নিজ নামে ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে ঢাকায় ২টি ফ্ল্যাট, জমি ক্রয়, গ্রামের বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণ, যশোর শহরের বেজপাড়ায় একটি বাড়ি, পুলেরহাটে ২টি বাড়ি ও নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলা শহরে একটি বাড়িসহ মোট ৮ কোটি ১৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। সেই মোতাবেক তিনি দুদকে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ হাজার ২৭৩ টাকার সম্পদ গোপন করে মিথ্যা ঘোষণা দিয়েছেন।

এ সম্পদ অর্জন করার সময় তিনি ১ কোটি ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ টাকার ঋণ গ্রহণ করেছেন। উক্ত ঋণ বাদ দিলে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭ কোটি ১০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৯৭ টাকা। এর বিপরীতে আসামি মো. আব্দুর রউফের করযুক্ত আয়, করমুক্ত আয়, প্রভিডেন্ট ফান্ড হতে প্রাপ্ত, লাম্পগ্রান্ট ও পেনশন হতে মোট ১ কোটি ৩৫ লাখ ২০ হাজার ৭৬৫ টাকা বৈধ আয় পাওয়া গেছে। তার দখলে থাকা সম্পদ হতে তার বৈধ আয় বাদ দিলে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮৩২ টাকা।

এভাবে মো. আব্দুর রউফ তার নিজ নামে ৩ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ লাখ ২৭৩ টাকার সম্পদ থাকার তথ্য দুদকে গোপন করে মিথ্যা বিবৃতি প্রদান করে এবং ৫ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮৩২ টাকা মূল্যমানের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ দখলে রাখার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন হতে তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়।

এরপর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোর থেকে আসামির বিরুদ্ধে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম